
ছবি: জনকণ্ঠ
মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্বারোপ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন অতিব জরুরি। মাছ আমিষের যোগানদাতা, প্রাণিজ আমিষ হিসেবে মাছ বাঙালির অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই ছোটমাছ কিভাবে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা যায়, তার জন্য বিএফআরআই (বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট) কে সচেষ্ট থাকতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগ, বিএফআরআই এবং মৎস্য অধিদপ্তরকে অভিন্ন লক্ষ্যে আন্তঃসমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তবেই বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব।
শনিবার (২১ জুন) সকালে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) ময়মনসিংহ কর্তৃক আয়োজিত বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা (২০২৫-২৬) প্রণয়ন শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বিজ্ঞানীরা জাতির মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে এই উপদেষ্টা বলেন, তারা যেন তাদের মেধা দিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে, গবেষণায় আরও মনোনিবেশ করতে পারে সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে। বিজ্ঞানীদের এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে, যা সাধারণ মানুষের বোধগম্য হবে এবং যার উপকারিতা জনগণ সরাসরি বুঝতে পারবে। এসব প্রযুক্তি যদি মৎস্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারিত করা যায়, তাহলে দেশে মাছের সংকট থাকবে না।
কীটনাশকের প্রভাবে মৎস সম্পদেও ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরো বলেন, কৃষি কার্যক্রমে ব্যবহৃত কীটনাশক হাওর এলাকার মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে এই কমিটিগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে হাওরাঞ্চলে কীটনাশক ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমবে। ফলে জলজ প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ও হুমকির মুখে থাকা মাছ শনাক্তে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) প্রজাতিগুলোকে লাল (বিপন্ন), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সাধারণ (নিরাপদ) শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাছের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিএফআরআই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। আর তা সফল হলে, তা দেশের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে একটি বড় মাইলফলক হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, গবেষণাকে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএফআরআই এর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় জরুরি।
এ সময় বিএফআরআই এর মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে ময়মনসিংহ বিভাগের মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক নৃপ্রন্দ্রে নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআই এর বিজ্ঞানী, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও মৎস্য খামারিরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাদুপানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন উর রশিদ গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন।
ছামিয়া