
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের গন্ধ আরও ঘন হচ্ছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান হামলা-পাল্টা হামলার আশঙ্কায় পুরো অঞ্চলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। সংঘাতের কেন্দ্রে এখন যুক্তরাষ্ট্রও যেকোনো মুহূর্তে সামরিকভাবে জড়ানোর শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমন উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে ইরান ও ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকরা একে একে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। মার্কিন প্রশাসনের এক গোপন বার্তায় উঠে এসেছে, শত শত নাগরিক ইতোমধ্যেই স্থলপথে ইরান ত্যাগ করেছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্ব গভীর হওয়ায় গত সপ্তাহজুড়ে ইরান থেকে শত শত মার্কিন নাগরিক দেশ ছেড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের গোপন বার্তায় বলা হয়েছে, অনেকেই নির্বিঘ্নে চলে যেতে পারলেও, অনেকে ভোগ করেছেন নানা হয়রানি ও বিলম্বের শিকার হয়েছেন।
বর্তমানে ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই, ফলে দেশটিতে মার্কিন নাগরিকদের উদ্ধার বা সহায়তা কার্যক্রম আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েল থেকেও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে মার্কিন কূটনীতিকদের
শুধু ইরান নয়, ইসরায়েলের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। দেশটিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে অন্তত ৭৯ জন কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কেউ কেউ আশ্রয় নিয়েছেন বাংকারে। মার্কিন দূতাবাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা।
ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইশফাহানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। এখানেই অবস্থিত দেশটির সবচেয়ে বড় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র ‘ইশফাহান নিউক্লিয়ার টেকনোলজি সেন্টার’। এই গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। হামলার সম্ভাবনার বিষয়ে চীন ও রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে সরব হয়ে আহ্বান জানাচ্ছে—পারমাণবিক স্থাপনায় যেন কোনোভাবেই হামলা না হয়।
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত পরিস্থিতি যে কোনো সময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তবে তার প্রভাব শুধু অঞ্চলিক নয় পৌঁছাতে পারে বৈশ্বিক নিরাপত্তা পর্যন্ত। পরমাণু স্থাপনার নিরাপত্তা, মার্কিন নাগরিকদের উদ্বিগ্ন প্রস্থানের ঢল, এবং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক দোলাচলে মধ্যপ্রাচ্য আজ যেন বিস্ফোরণের প্রহর গুনছে।
আফরোজা