টাক পড়া সমস্যার চিকিৎসা: নতুন গবেষণায় মিলল শতভাগ সাফল্য

টাক পড়া কি এবার পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য? বিজ্ঞানীরা বলছেন, হয়তো তাই। স্পেনের মাদ্রিদের সান কার্লোস ক্লিনিক্যাল হাসপাতালের গবেষকেরা সম্প্রতি একটি নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে ইঁদুরের শরীরে ১০০% চুল গজানো সম্ভব হয়েছে।

প্রতিষেধকটি তৈরি হয়েছে চর্বি-জাত স্টেম সেল এবং এনার্জি মলিকিউল অ্যাডেনোসিন ট্রাইফসফেট (ATP) এর সমন্বয়ে। গবেষণাটি আন্তর্জাতিক জার্নাল Stem Cell Research and Therapy-তে প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, চিকিৎসা পাওয়া পুরুষ ইঁদুরদের সকলের শরীরে চুল গজিয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের শরীরে সম্পূর্ণভাবে এবং বাকি অর্ধেকের শরীরে ব্যাপক হারে চুল ফিরে এসেছে। নারী ইঁদুরদের মধ্যেও ৯০% ক্ষেত্রে চুল গজানোর লক্ষণ ছিল তীব্র অথবা সম্পূর্ণ।

কীভাবে কাজ করে এই চিকিৎসা?

প্রধান গবেষক এদুয়ার্দো লোপেজ ব্রান জানান, ‘স্টেম সেলের পুনরুদ্ধার ক্ষমতা ও ATP-র শক্তিকে একত্রিত করে এই পদ্ধতিটি চুলের ফলিকল পুনরুজ্জীবিত করে এবং চুল গজানোর অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে।’

মানুষের শরীরে এই চিকিৎসা কেমন কার্যকর হবে, তা জানতে এখনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বাকি। তবে গবেষকেরা মনে করছেন, এটি চুল পড়া সমস্যায় ভুগতে থাকা লাখো মানুষের জন্য আশার আলো হতে পারে।

চুল পড়ার চিকিৎসায় নতুন দিগন্ত

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের প্রবণতা বাড়লেও অনেক ক্ষেত্রেই একাধিক অস্ত্রোপচার করতে হয় কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে। এছাড়া চিকিৎসকদের সরাসরি পর্যবেক্ষণ ছাড়াই অপারেশন করানোর প্রবণতাও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসভিত্তিক হেয়ার রিস্টোরেশন বিশেষজ্ঞ ড. স্যামুয়েল ল্যাম ‘নিউ ইয়র্ক পোস্ট’-কে বলেন, ‘তুরস্কে এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত ট্রান্সপ্লান্ট সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে, তবে আমেরিকাতেও এর প্রবণতা কম নয়।’

গবেষক লোপেজ ব্রান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা এমন এক ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছি, যেখানে টাক পড়া রোধে নতুন ও কার্যকর সমাধান রোগীদের জন্য সহজলভ্য হবে। এর ফলে রোগীরা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, মানসিকভাবে আরও বেশি স্বস্তি পাবে।’

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদ্ধতির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সফল হলে এটি হবে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মেডিকেল অগ্রগতি—বিশেষ করে সেইসব মানুষের জন্য, যারা দীর্ঘদিন ধরে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন।

সূত্র: এনডিটিভি।