ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

চুল মজবুত থেকে হাড় শক্ত: প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ১০টি অসাধারণ উপকারিতা!

প্রকাশিত: ১৯:১৭, ২২ জুন ২০২৫

চুল মজবুত থেকে হাড় শক্ত: প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ১০টি অসাধারণ উপকারিতা!

ছবিঃ সংগৃহীত

ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার, যা স্বাস্থ্যকর চর্বি, প্রোটিন এবং বিভিন্ন ভিটামিনে পরিপূর্ণ। প্রতিদিন ডিম খাওয়ার অভ্যাস আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকার বয়ে আনে। এটি শুধু চুল ও ত্বককে করে সুন্দর, হাড়কে করে শক্তিশালী, বরং মস্তিষ্ক, চোখ ও হৃদ্‌যন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্যও কার্যকর।

চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রতিদিন ডিম খাওয়ার ১০টি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত উপকারিতা—

১. পুষ্টিগুণে ভরপুর

ডিম প্রকৃতপক্ষে একটি সুপারফুড। প্রতিটি বড় আকারের সেদ্ধ ডিমে থাকে মাত্র ৭৮ ক্যালোরি, ৬ গ্রাম প্রোটিন এবং ৫ গ্রাম চর্বি।
এছাড়া রয়েছে—

  • ভিটামিন এ: দৈনিক চাহিদার ৮%

  • ফলেট: ৬%

  • ভিটামিন বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড): ১৪%

  • ভিটামিন বি১২: ২৩%

  • ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্লাভিন): ২০%

  • ফসফরাস: ৭%

  • সেলেনিয়াম: ২৮%

ডিমে আরও রয়েছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন বি৬, ক্যালসিয়াম এবং জিঙ্কের ভালো মাত্রা।

২. হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে সহায়ক

ডিম খেলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে—এই পুরনো ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে ডিম খায়, তাদের রক্তে ‘অ্যাপোলিপোপ্রোটিন এ১’ নামক একটি প্রোটিনের মাত্রা বেশি থাকে, যা ‘ভালো কোলেস্টেরল’ (HDL)-এর মূল উপাদান। এই HDL কোলেস্টেরল রক্তনালির আবর্জনা পরিষ্কার করে, ফলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমে।

তবে কিছু গবেষণায় ডিম খাওয়ার সঙ্গে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্কও উল্লেখ করা হয়েছে। তাই পরিমিত খাওয়াই উত্তম।

৩. মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ায়

ডিমে থাকা কোলিন নামক উপাদান মস্তিষ্কের জন্য খুবই জরুরি। এটি স্মৃতি, মনোভাব ও বুদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক। একটি ডিমে প্রায় ১৪৭ মিলিগ্রাম কোলিন থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতিভ্রষ্টতা এড়াতে কোলিন অত্যন্ত কার্যকর।

৪. চোখের যত্নে

ডিমে রয়েছে লুটেইন ও জিয়াক্সানথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা বয়সজনিত চোখের সমস্যা যেমন ছানি ও ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সহায়ক।

৫. হাড়কে করে শক্তিশালী

ডিমে থাকা ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে সহায়তা করে, যা হাড়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি অস্টিওপোরোসিস, হাড় ক্ষয় এবং ভাঙার ঝুঁকি কমায়।

৬. চুল ও ত্বক সুন্দর রাখে

ডিমে থাকা বায়োটিন ও বি-ভিটামিন চুল, ত্বক এবং নখকে রাখে স্বাস্থ্যকর। বায়োটিনের ঘাটতি চুল পড়ার কারণ হতে পারে, আর ডিম এই ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।

৭. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

ডিম প্রোটিনে ভরপুর এবং কম ক্যালোরিযুক্ত। এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে, ক্ষুধা কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। প্রোটিনসমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট হিসেবে ডিম খেলে সারাদিন ক্ষুধা কম লাগে।

৮. মাংসপেশি শক্তিশালী করে

ডিমের উচ্চমানের প্রোটিন মাংসপেশির গঠন ও মেরামতে সাহায্য করে, যা শরীরচর্চা করা ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ উপকারী। ডিম হলো স্বল্পমূল্যে উচ্চমানের প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস।

৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

ডিমে থাকা সেলেনিয়ামজিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। এগুলো বিভিন্ন ভাইরাস ও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

১০. ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়

নিয়মিত ডিম খাওয়ায় HDL কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এর ফলে হৃদ্‌রোগ, স্ট্রোক এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জটিলতা কমে।

বিশেষ পরামর্শ
যদি আপনি নিরামিষভোজী না হন, তবে প্রতিদিন ডিম রাখুন আপনার খাদ্যতালিকায়—সেদ্ধ, ভাজা কিংবা ঝটপট অমলেট করে খেলেও উপকার পাবেনই। তবে সবসময় পরিমিত এবং স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গ্রহণ করুন।

ডিম খান, স্বাস্থ্যবান থাকুন!

সূত্রঃ https://timesofindia.indiatimes.com/life-style/health-fitness/health-news/from-thick-hair-to-strong-bones-10-benefits-of-eating-eggs-daily/articleshow/121985740.cms

ইমরান

×