ছবিঃ সংগৃহীত
ঘুম মানুষের শরীর ও মনের পুনরুদ্ধারের জন্য অত্যন্ত জরুরি একটি প্রক্রিয়া। তবে ব্যস্ততা, উদ্বেগ, অনিয়মিত জীবনযাপন বা স্বাস্থ্যগত কারণে অনেকেই পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত হন। দীর্ঘদিন অনিদ্রা চলতে থাকলে তা হৃদ্রোগ, স্নায়ুবিক সমস্যা, স্থূলতা এমনকি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দুর্বলতার মতো নানা জটিলতা তৈরি করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা গভীর ও নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম প্রয়োজন। ঘুমের ওষুধ খাওয়ার আগে তাই প্রাকৃতিক সমাধান খোঁজা শ্রেয়। কিছু নির্দিষ্ট খাবার রয়েছে, যা নিয়মিত খেলে ঘুম সহজে আসতে পারে। জেনে নিন এমনই ৫টি খাবারের কথা যা অনিদ্রা দূর করতে কার্যকর—
১. কাঠবাদাম
কাঠবাদামে রয়েছে ‘মেলাটোনিন’ নামক হরমোন, যা শরীরের জৈবিক ঘড়ি বা স্লিপ সাইকেল নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম ঘুম আনতে সহায়তা করে এবং স্নায়ুকে শান্ত রাখে। প্রতিদিন রাতে কিছু কাঠবাদাম খাওয়া যেতে পারে।
২. মধু
মধু শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা খানিকটা বাড়িয়ে মস্তিষ্কে ট্রিপটোফ্যান পাঠাতে সাহায্য করে। ট্রিপটোফ্যান থেকে উৎপন্ন সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন ঘুম ও ঘুম থেকে জাগার চক্র সঠিকভাবে পরিচালনায় সহায়তা করে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক চামচ মধু খেলে ঘুম দ্রুত ও গভীর হতে পারে।
৩. লেটুস
লেটুস পাতায় থাকে ‘ল্যাকটুক্যারিয়াম’ নামে এক ধরনের উপাদান, যা প্রাকৃতিকভাবে স্নায়ুকে শান্ত করে ও ঘুম আনতে সাহায্য করে। রাতে লেটুসপাতা দিয়ে তৈরি হালকা স্যুপ বা সালাদ খাওয়া যেতে পারে। চাইলে কয়েকটি লেটুসপাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে চায়ের মতো করেও খাওয়া যায়।
৪. দুধ ও কলা
দুধ ও কলা — দুটোই ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ, যা ঘুম হরমোন তৈরিতে সহায়ক। দুধে ক্যালসিয়ামও রয়েছে, যা ট্রিপটোফ্যানের প্রভাব বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে কলাতে আছে ম্যাগনেশিয়াম, যা মাংসপেশি ও স্নায়ুর শিথিলতা ঘটায়। রাতে এক গ্লাস দুধের সঙ্গে একটি কলা হতে পারে আদর্শ ঘুম আনার খাবার।
৫. ভাত
‘ভাতঘুম’ কথাটি শুধু প্রবাদ নয়, এর পেছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তিও আছে। ভাতে রয়েছে উচ্চ গ্লাইসেমিক ইনডেক্স, যা ঘুমাতে যাওয়ার এক ঘণ্টা আগে খেলে ঘুম দ্রুত আসতে সাহায্য করতে পারে। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতি ব্যবহার করার আগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
শেষ কথা
ঘুমানোর আগে ওষুধ নয়, বরং খাবারে হোক ঘুমের সমাধান। উপরের এই ৫টি খাবার আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলে ধীরে ধীরে অনিদ্রা কমবে এবং ফিরবে প্রশান্তির ঘুম।
আলীম
