
সংগৃহীত
‘তালাক’ মানে হলো বিবাহ বিচ্ছেদ। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী একজন মুসলিম পুরুষ চাইলে শর্ত ছাড়া স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। কিন্তু মুসলিম নারীদের জন্য তালাক দেওয়ার সুযোগ খুবই সীমিত এবং বেশিরভাগ সময় শর্তের উপর নির্ভর করে।
মুসলিম নারী কীভাবে তালাক দিতে পারেন?
- মুসলিম নারীরা সরাসরি তালাক দিতে পারেন না।
- তাদের তালাক দেওয়ার অধিকার পেতে হলে স্বামীর কাছ থেকে আগে অনুমতি নিতে হয়।
- এই অনুমতি যদি স্বামী বিয়ের সময় দেন, তখন স্ত্রী নিজেই তালাক দিতে পারবেন। এই নিয়মকে বলা হয় ‘তালাক-ই-তাওফিজ’।
এই অধিকার সাধারণত কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে লেখা হয়। যদি সেখানে লেখা থাকে, স্বামী স্ত্রীকে শর্ত ছাড়া তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়েছেন, তাহলে স্ত্রী চাইলে যেকোনো সময় তালাক দিতে পারবেন।
কিন্তু যদি শর্ত দিয়ে অধিকার দেন, যেমন "স্বামী যদি স্ত্রীকে ভরণপোষণ না দেন, তখন স্ত্রী তালাক দিতে পারবে’,তাহলে শুধু সেই শর্ত পূরণ হলেই স্ত্রী তালাক দিতে পারবেন।
যদি অন্য সমস্যা হয়, যেমন,মারধর করা, তবুও সে সময় স্ত্রী নিজে তালাক দিতে পারবেন না। তখন তাকে আদালতে যেতে হবে বা স্বামীর অনুমতি নিতে হবে।
কেন কাবিননামার ১৮ নম্বর কলাম গুরুত্বপূর্ণ?
আমাদের দেশে অনেকেই মনে করেন, তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু শর্ত দিয়েই দেওয়া যায়। কিন্তু আসলে স্বামী চাইলে স্ত্রীকে ‘বিনা শর্তে’ তালাক দেওয়ার অধিকার দিতে পারেন। তাছাড়া একজন স্ত্রী তালাক প্রাপ্তির জন্য পারিবারিক আদালতের স্বরণাপন্ন হতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে তাকে কিছু শর্ত পূরণ হয়েছে মর্মে আদালতকে স্পষ্ট করতে হয়। শর্তগুলো হলো:
- ১। স্বামী কর্তৃক ভরণপোষণ না পাওয়া।
- ২। স্বামীর পুরুষত্বহীনতা।
- ৩। স্বামী দীর্ঘদিন যাবৎ নিখোঁজ রয়েছেন।
তাই বিয়ের সময় কাবিননামার ১৮ নম্বর কলাম ভালোভাবে পড়া এবং বুঝে পূরণ করা খুব দরকার। সেখানে স্পষ্ট করে লিখতে হবে তালাকের অধিকার শর্তহীন নাকি শর্তসাপেক্ষে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন:
- মুসলিম পুরুষ তালাক দিতে পারেন সহজে, নারীদের জন্য এটি শর্তসাপেক্ষ।
- স্ত্রী স্বামীর কাছ থেকে ‘তালাক-ই-তাওফিজ’ পাওয়ার মাধ্যমে তালাক দিতে পারেন।
- এই অধিকার কাবিননামার ১৮ নম্বর কলামে লেখা হয়।
- স্বামী চাইলে বিনা শর্তেও স্ত্রীকে তালাকের অধিকার দিতে পারেন।
- বিয়ের সময় কাবিননামা ভালোভাবে পড়া ও বুঝে সই করা জরুরি।
এই বিষয়ে মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে। কাবিননামার ১৮ নম্বর কলাম যেন পরিষ্কার ভাষায় লেখা হয়, সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে হবে। তাহলে ভুল বোঝাবুঝি এবং আইনি ঝামেলা কম হবে।
হ্যাপী