ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ইহুদিদের অভিশপ্ত হওয়ার ১০টি কারণ! কুরআনে যা বলা হয়েছে

প্রকাশিত: ২০:৩৩, ২৫ জুন ২০২৫

ইহুদিদের অভিশপ্ত হওয়ার ১০টি কারণ! কুরআনে যা বলা হয়েছে

ছবি: প্রতীকী

ইহুদিরা এমন একটি জাতি, যারা আদিকাল থেকেই পৃথিবীতে নানাবিধ অশান্তি ও যুদ্ধ-বিগ্রহে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। তাদের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহু সংখ্যক নবী ও রাসূল হত্যার ইতিহাস। অথচ এক সময় তারাও ছিল আহলে কিতাব—যাদের মধ্যেও হেদায়েতপ্রাপ্ত ও ভালো মানুষ ছিল।

যারা তাদের নবীদের আনীত কিতাব ও শরিয়ত মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিল, এবং নবীর বিদায়ের পরও তাদের শরিয়তের উপর অটল ছিল—কোরআনুল কারীম তাদেরকে "উম্মাতুম মুকতাসিদা" বা সঠিক পথের অনুসারী বলে অভিহিত করেছে। কোরআনে বলা হয়েছে—

"আর যদি তারা তাওরাত, ইনজিল ও তাদের প্রভুর পক্ষ থেকে যা নাজিল করা হয়েছে তা কায়েম করত, তবে তাদের উপর থেকে এবং পায়ের নিচ থেকে রিযিক পেত প্রাচুর্যের সাথে। তাদের মধ্যে সৎ লোকের একটি দল রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই মন্দ কাজ করে।" (সূরা আল-মায়িদা: ৬৬)

এ আয়াতের শেষে বলা হয়েছে:
"ওয়া কাসীরুম মিনহুম সা'আ মা ইয়ামালুন"
অর্থাৎ—"তাদের অধিকাংশই মন্দ কাজে লিপ্ত।"

কোরআনের আরও এক জায়গায় বলা হয়েছে:
"ফাসিকুন"—অর্থাৎ, তাদের অধিকাংশই অবাধ্য। এভাবেই বহু আয়াতে ইহুদিদের অবাধ্যতা, সীমালঙ্ঘন ও পাপকর্মের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।

আজ আমরা কোরআনুল কারীম ও সহীহ হাদীসের আলোকে ইহুদিদের অভিশপ্ত হওয়ার দশটি কারণ সংক্ষেপে আলোচনা করবো।

ইহুদিদের অভিশপ্ত হওয়ার ১০টি প্রধান কারণ

১. আল্লাহর শানে বেয়াদবি করা
যেমন, যাকাতের বিধান নাযিল হওয়ার পর তারা বলেছিল:
"ইন্নাল্লাহু ফকীর ওয়া নাহনু আঘনিয়া"
অর্থাৎ—"আল্লাহ দরিদ্র, আর আমরা ধনী!"
এ কথা বলার পর আল্লাহ বললেন:
"আমরা তা লিপিবদ্ধ করে রাখব, এবং বলব—আস্বাদন করো জাহান্নামের আগুন!" (সূরা আলে ইমরান: ১৮১)

২. নবী ও রাসূলদের হত্যা
যখনই নবীগণ শরিয়তের কোনো বিধান নিয়ে আসতেন যা তাদের মনপুত হতো না, তখন তারা অহংকার করে তা প্রত্যাখ্যান করত, এমনকি সেই নবীকেও হত্যা করত। কোরআনে বলা হয়েছে:
"তোমরা কিছু নবীকে অস্বীকার করেছ, আর কিছু নবীকে হত্যা করেছ।" (সূরা আল-বাকারা: ৮৭)

৩. চুক্তি ভঙ্গ করা
কোরআনে এসেছে:
"তারা প্রতিবার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তারা বিন্দুমাত্র ভয় করে না।" (সূরা আল-বাকারা: ১০০)

৪. সুদ গ্রহণ করা
যদিও তাদের ধর্মে সুদ নিষিদ্ধ ছিল, তথাপি তারা সুদের লেনদেন করত। (সূরা নিসা: ১৬১)

৫. অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা
তারা বহুবার অন্য জাতির সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করেছে। (সূরা আল-মায়িদা: ৪২)

৬. মানুষকে আল্লাহর দ্বীন গ্রহণে বাধা দেওয়া
তারা আল্লাহর প্রেরিত দ্বীন গ্রহণে মানুষকে বাধা দিয়েছে এবং বিভ্রান্ত করেছে। (সূরা তাওবা: ৩৪)

৭. কুফরি ও সীমালঙ্ঘন করা
তারা একাধিকবার স্পষ্টভাবে কুফরি ও সীমালঙ্ঘন করেছে। (সূরা মায়িদা: ৭৮)

৮. হেদায়াত প্রত্যাখ্যান করে অজুহাত দেয়া
তাদের অজুহাত ছিল:
"আমাদের অন্তর তালাবদ্ধ, তাই নতুন কোনো ধর্ম গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব না।" (সূরা বাকারা: ৮৮)

৯. মারিয়াম (আ.)-কে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া
তারা মারিয়াম (আ.)-এর চরিত্রে কুৎসা রটিয়েছে। (সূরা নিসা: ১৫৬)

১০. ঈসা (আ.)-কে শুলে বিদ্ধ করে হত্যার দাবি
তারা মিথ্যাভাবে দাবি করেছে যে তারা ঈসা (আ.)-কে হত্যা করেছে। (সূরা নিসা: ১৫৭)

আখেরে কী হলো?
এমন পাপকর্ম, সীমালঙ্ঘন ও অহংকারের কারণেই ইহুদিদের ওপর নেমে এসেছে অভিশাপ। কোরআনে বলা হয়েছে:

"বনী ইসরাইলের মধ্যে যারা কুফরি করেছে, তাদেরকে দাউদ ও মারিয়ামপুত্র ঈসার মুখে উচ্চারিত কথার মাধ্যমে অভিশপ্ত করা হয়েছে। কারণ তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী।" (সূরা মায়িদা: ৭৮)

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=Wklo51UqqLo

নুসরাত

×