
ছবি: সংগৃহীত।
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ চত্বরে এবার ইহুদি বসতিস্থাপনকারীদের প্রকাশ্যে গান গাওয়া ও নাচের অনুমতি দিল ইসরায়েল। কট্টর ডানপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম।
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের চ্যানেল ৭ জানিয়েছে, বেন-গভিরের নতুন নীতির আওতায় বহু বছর পর এই প্রথম ইহুদি দর্শনার্থীরা আল-আকসা চত্বরে প্রকাশ্যে গান ও নৃত্য করতে পারবে।
বেন-গভির নিজেও একজন অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ও কট্টর জিউইশ পাওয়ার পার্টির প্রধান। বর্তমানে তিনি ইসরায়েলি পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ অনুযায়ী, পুলিশের কমিশনার কোবি শাবতাই মাঠপর্যায়ের বাহিনীকে জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে আল-আকসা চত্বরে ইহুদি প্রার্থনা ও সংগীত পরিবেশনের অনুমতি দিতে হবে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত আল-আকসা চত্বর সংক্রান্ত ঐতিহ্যবাহী ‘স্থিতাবস্থা’ (status quo) নীতির বড় ধরনের লঙ্ঘন বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা। কারণ, মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম এই স্থানে এধরনের ইহুদি ধর্মীয় আচরণ এতদিন নিষিদ্ধ ছিল।
তিন সপ্তাহ আগে বেন-গভির ইহুদি ধর্মীয় প্রবেশাধিকার সমর্থনকারী গোষ্ঠীগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে তিনি স্পষ্ট বলেন, “আমার নীতি হলো—আল-আকসা চত্বরে সর্বত্র গান গাওয়ার অনুমতি দেওয়া।”
আল-আকসা মসজিদের ধর্মীয় ও প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা জেরুজালেম ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ বলছে, বেন-গভির দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চত্বরে ইহুদিদের নিয়ম লঙ্ঘন ও উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে।
এ নীতিকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পূর্বঘোষিত বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। কারণ নেতানিয়াহু আগেই বলেছিলেন, “আল-আকসার স্ট্যাটাস কু পরিবর্তন করা হবে না।”
ইসরায়েল ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং ১৯৮০ সালে শহরটিকে একতরফাভাবে নিজেদের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে—যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো স্বীকৃতি দেয়নি। মুসলমানদের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ অবস্থিত এই চত্বরেই ইহুদিরা তাদের কথিত ‘টেম্পল মাউন্ট’-এর দাবি তুলে আসছে।
নুসরাত