ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৮ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

“বিজয়ের দিন” বললেন ট্রাম্প: সুপ্রিম কোর্টে জয় পেয়ে উচ্ছ্বসিত

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৫৬, ২৮ জুন ২০২৫

“বিজয়ের দিন” বললেন ট্রাম্প: সুপ্রিম কোর্টে জয় পেয়ে উচ্ছ্বসিত

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট শুক্রবার এক ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে, যার ফলে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভবিষ্যতের যেকোনো প্রেসিডেন্ট নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নে আরও ক্ষমতাবান হয়ে উঠবেন। এই রায়ে নিম্ন আদালতগুলোর দেশব্যাপী নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ক্ষমতা সীমিত করা হয়েছে, যা এতদিন বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী উদ্যোগে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুমে দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই রায়কে “একটি বড় ও অসাধারণ বিজয়” আখ্যা দেন এবং বলেন, “এটি সংবিধান, ক্ষমতার বিভাজন ও আইনের শাসনের পক্ষে একটি মাইলফলক রায়।”

জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত

এই রায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো—ট্রাম্পের বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ, যা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব প্রদান বন্ধ করতে চায়, তা এক মাস পর থেকে কার্যকর হবে। যদিও রায়ে নিম্ন আদালতগুলোর জন্য সীমিত হস্তক্ষেপের সুযোগ রাখা হয়েছে, তবে এতদিন যে আদেশটি স্থগিত ছিল, তা এখন কার্যকর হতে যাচ্ছে।

তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ থেকেই যাবে। কারণ, জন্ম নিবন্ধনের দায়িত্ব অঙ্গরাজ্যগুলোর, এবং ডেমোক্র্যাট-শাসিত অনেক রাজ্যই পিতামাতার নাগরিকত্বের তথ্য সংগ্রহ করে না। বিচারপতি অ্যামি কনি ব্যারেট রায়ে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গরাজ্যগুলো চাইলে আরও বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞার আবেদন করতে পারবে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিষয়ে বলেন, “জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের প্রতারণা আজ গুরুতরভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। এই রায় আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত করবে।”


নির্বাহী ক্ষমতা বাড়িয়ে দিল আদালত

সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টরা এখন তাদের নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আরও স্বাধীনতা পাবেন। এতদিন ফেডারেল জেলার কিছু বিচারক এককভাবে অনেক নীতিকে স্থগিত করে রেখেছিলেন, যার ফলে নীতির বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হতো।

কংগ্রেসনাল রিসার্চ সার্ভিসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রেসিডেন্সির প্রথম তিন বছরে ২৫টি নির্বাহী আদেশ নিম্ন আদালতের মাধ্যমে স্থগিত হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য কর্মসূচি বাতিল, বিদেশি সাহায্য কমানো, অভিবাসন সংস্কার এবং সরকারি কর্মচারী ছাঁটাই সংক্রান্ত নীতি।

শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, “আমরা এখন আমাদের নীতিগুলো যথাযথভাবে এগিয়ে নিতে পারব, যেগুলো এতদিন ভুলভাবে আদালতের মাধ্যমে আটকে রাখা হয়েছিল।”

ভবিষ্যতের জন্যও প্রভাবশালী দৃষ্টান্ত

এই রায়ের প্রভাব শুধু ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য নয়, ভবিষ্যতের সব প্রেসিডেন্টের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে প্রেসিডেন্টদের নীতিগুলো এখন প্রাথমিকভাবে কার্যকর হওয়ার সুযোগ পাবে, এবং তা আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে না পড়া পর্যন্ত অনেকদূর এগোতে পারবে।

উল্লেখযোগ্যভাবে, ওবামা এবং বাইডেন প্রশাসনও অতীতে আদালতের বাধার মুখে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ কার্যকর করতে পারেনি—যেমন: ছাত্র ঋণ মওকুফ, পরিবেশনীতি, বা ওভারটাইম পেমেন্ট আইন।

সুপ্রিম কোর্ট তাদের রায়ে বলেছে, “নিম্ন আদালতগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে যে, প্রতিটি মামলার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা এই নতুন নিয়ম অনুসারে ন্যায্যতার ভিত্তিতে কার্যকর হবে।”

এই রায়ের ফলে, আদালত ভবিষ্যতে যদি কোনো আদেশকে অবৈধ ঘোষণা করে, তখনই কেবল তা সম্পূর্ণভাবে থামানো যাবে। এর আগ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টদের নীতির বাস্তবায়নে বড় ধরনের সুযোগ তৈরি হলো।

Mily

×