
শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালায় শুক্রবার মঞ্চস্থ ‘আর কত দিন’ নাটকের দৃশ্য
শুক্রবার ছুটির দিনেও দারুণ সরব ছিল রাজধানীর নাট্যাঙ্গন। সেই সুবাদে নাট্যপ্রেমীরা ভিড় জমিয়েছিলেন শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা আঙিনায়। আর তাদের মন রাঙাতে এদিন নাট্যশালার তিনটি মিলনায়তনেই ছিল ভিন্ন ভিন্ন তিন নাট্যদলের নাট্য প্রদর্শনী। আর এই তিন নাটকের মধ্যে দুটি নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয় এদিন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনাস্নাত প্রযোজনা দুটি মঞ্চে এনেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আষাঢ়ের সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয় এই দুই নয়া প্রযোজনা। নাটক দুটি হলো ‘আর কত দিন’ ও ‘অগ্নিশ্রাবণ’। এর মধ্যে আর কত দিন নাটকটি ঘিরে ছিল দর্শকদের বিশেষ আগ্রহ। কারণ নাটকটির গল্পের গহিনে রয়েছে খরস্রোতা বিপ্লবের সংগ্রামী অধ্যায়ের বয়ান। একাডেমি জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে নাটকটির উদ্বোধন মঞ্চায়ন হয়। কথাসাহিত্যিক জহির রায়হানের বিখ্যাত উপন্যাস ‘আর কত দিন’ অবলম্বনে নাট্যদল অন্তর্যাত্রা প্রযোজিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন খন্দকার রাকিবুল হক।
বাঙালি কালে কালে অত্যাচারী শোষকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু ইতিহাস বলে সে লড়াই কখনো শেষ হয়নি। তাই বারবার মনে প্রশ্ন জাগে- আর কত দিন? প্রযোজনাটি সম্পর্কে নির্দেশক খন্দকার রাকিবুল হক বলেন, জহির রায়হান রচিত ‘আর কত দিন’ অভিব্যক্তিবাদী রচনা। মঞ্চ প্রয়োগ ভাবনা দুরূহ এবং সময়সাপেক্ষ। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিপ্লব ও বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশেরর চিত্র, প্রশ্ন এবং সংকট উত্তরণের ধারণা উপন্যাসের মননে রয়েছে।
মঞ্চ ও আলোর প্রয়োগ থিয়েট্রিক্যালিজম ধারার অনুবর্তী। পোশাকের ক্ষেত্রে কন্সট্রাকটিভজমের আপাত ধারণার প্রয়োগ স্পষ্ট। ‘আর কত দিন’-এর মঞ্চ প্রয়োগে জাদু বাস্তবতার আভাস রয়েছে। গল্পটি একরৈখিক নয়। ঘটনার আভাসে অনুঘটন স্পষ্ট। নাটকের সকল উপাদান নন-রিয়েলিস্টিক উপাদানের আপাত ধারণায় নির্মিত নাটক এটি। নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনায় রয়েছেন রাসেল ইসলাম এবং আলোক পরিকল্পনায় রয়েছেন অম্লান বিশ্বাস। পোশাক ও সংগীত পরিকল্পনা করেছেন শাহীনূর আক্তার প্রীতি ও অর্ণব মল্লিক।
প্রযোজনাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহজাদা সম্রাট চৌধুরী, সৌমিক বাগচী, সাজ্জাদুল ইসলাম শুভ, উম্মিতা চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমেদ, ঐন্দ্রিলা মজুমদার অর্ণা, সপ্তর্ষী বিশ্বাস, প্রজ্ঞা প্রতীতি, মুনতাহানা ফিজা, মুস্তাফিজ তোফা, মুক্তাদিরুল ইসলাম সিফাত, শাফায়েত জামিল লিজান, দেবাদ্রিতা সরকার অহনা, মিথিলা তাসফিয়া, স্নেহা বান্টা, আতিকুজ্জামান শিবলু ও অথৈ সরকার আঁচল।
শিল্পকলা একাডেমি নাটকটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত ছিল।
প্যানেল