
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি বৈষম্যহীন ও মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘদিনের বৈষম্য ও অনিয়ম দূর করে দেশে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠাই সরকারের মূল লক্ষ্য। এই অনিয়ম ও বৈষম্য সংস্কারের মাধ্যমে দূর করতে হবে—এমন মন্তব্য করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে ঢাকার ধামরাইয়ে ঐতিহ্যবাহী শ্রীশ্রী যশোমাধব দেবের রথযাত্রা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক উন্নত হয়েছে। সাধারণ জনগণের সহযোগিতা পেলে তা আরও সন্তোষজনক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে আমি বিশ্বাস করি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে।”
তিনি আরও বলেন, “রথযাত্রা হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও এতে সব শ্রেণি-পেশা ও ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণ থাকে। এটি আমাদের ঐক্য ও সংস্কৃতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।”
উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “ধামরাইয়ে রথযাত্রা উৎসব বাংলা ১০৭৯ সাল থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এ উৎসব নিঃসন্দেহে আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্যের প্রতীক। এই উপলক্ষে আয়োজিত মাসব্যাপী শিল্পমেলা গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে বলেও আমি বিশ্বাস করি।”
উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শ্রীশ্রী যশোমাধব মন্দির পরিচালনা কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) জীবন কানাই দাস।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:
-
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমান
-
পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান পিপিএম
-
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামনুন আহমেদ অনীক
-
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম
-
ঢাকা জেলা যুবদলের সভাপতি ইয়াসিন ফেরদৌস মুরাদ
-
স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি
-
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাজীব প্রসাদ সাহা ও যুগ্ম সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন প্রমুখ।
৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রথযাত্রা উৎসবে লাখো ভক্তের অংশগ্রহণে ধামরাই পরিণত হয় উৎসবমুখর জনসমুদ্রে। আলোচনা সভা শেষে মঙ্গলদীপ প্রজ্বালন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে পুরোহিতের হাতে প্রতীকী রশি তুলে দিয়ে প্রধান অতিথি আনুষ্ঠানিকভাবে রথযাত্রার উদ্বোধন করেন।
রথটি লাখো ভক্তের টানে কায়েতপাড়া রথখোলা থেকে গোপনগর এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। আগামী ৫ জুলাই ‘উল্টো রথ টান’-এর মাধ্যমে উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটবে, তবে মেলা চলবে মাসব্যাপী।
নুসরাত