ঔষধ বা দামি সাপ্লিমেন্টের ওপর নির্ভর না করে, দৈনন্দিন ডায়েটে মাত্র তিনটি ঘরোয়া পানীয় যোগ করলেই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা চোখে পড়ার মতোভাবে বাড়ানো সম্ভব—এমনটাই বলছেন পুষ্টিবিদরা। এমনকি এই পানীয়গুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকটা কমে আসতে পারে।
মাচা গ্রিন টি: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর
প্রথমেই আসে মাচা গ্রিন টি’র নাম। এই বিশেষ ধরনের সবুজ চায়ে থাকে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পলিফেনল ও অ্যামাইনো অ্যাসিড, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। গবেষণায় দেখা গেছে, মাচা চায়ের উপাদানগুলোর কিছু ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতেও সহায়ক হতে পারে। সেইসাথে এটি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় এবং প্রদাহজনিত অসুখের ঝুঁকি কমায়।
তৈরি করাও বেশ সহজ—এক কাপ গরম পানিতে এক চা চামচ মাচা গুঁড়া মেশাতে হবে। চাইলে স্বাদ বাড়াতে সামান্য ব্রাউন সুগার ও দুধও যোগ করা যায়। এরপর চুলায় হালকা গরম করে নেড়েচেড়ে খেলেই তৈরি স্বাস্থ্যকর মাচা গ্রিন টি।
গ্রিন স্মুদি: সবুজ শাকসবজির পুষ্টিগুণে ভরপুর
দ্বিতীয় পানীয়টি হলো গ্রিন স্মুদি, যা মূলত বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ও ফলের মিশ্রণে তৈরি। পালংশাক, কলা ও শসা ব্লেন্ড করে এতে সামান্য পরিমাণে আদা ও গোলমরিচ গুঁড়া মেশানো হলে এটি আরও উপকারী হয়ে ওঠে।
গ্রিন স্মুদিতে থাকে ফাইবার, ভিটামিন এ, সি ও ই, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রনের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যা শরীরকে করে তোলে সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্ষম।
হলুদ দুধ: প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধী পানীয়
তৃতীয় পানীয় হিসেবে পুষ্টিবিদরা সুপারিশ করছেন হলুদ দুধ বা ‘গোল্ডেন মিল্ক’। এতে থাকা প্রধান উপাদান কারকিউমিন, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এর সাথে যদি যোগ করা হয় দারুচিনি ও গোলমরিচ, তবে তা রোগ প্রতিরোধে বহুগুণে কার্যকর হয়ে ওঠে।
গোলমরিচে থাকা পিপারিন উপাদান কারকিউমিনের কার্যকারিতা বাড়ায়। সেইসাথে এতে আছে ফাইবার, প্রোটিন, খনিজ উপাদান ও সামান্য পরিমাণ শর্করা, যা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতায় ভূমিকা রাখে।
পুষ্টিবিদদের পরামর্শ: নিয়মিত গ্রহণই মূল চাবিকাঠি
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তিনটি পানীয় নিয়মিত ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ার পাশাপাশি ক্যান্সারসহ নানা দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা থেকেও দূরে থাকা সম্ভব। ঘরে বসেই এই পানীয়গুলো তৈরি করা যায়, খরচও কম, উপকারিতা বহুগুণ।
তাই, সুস্থ থাকতে এখনই অভ্যাস করুন প্রতিদিনের শুরুটা একটি মাচা চা, একটি গ্রিন স্মুদি ও এক গ্লাস হলুদ দুধ দিয়ে। নিঃসন্দেহে আপনার শরীর আপনাকে ধন্যবাদ জানাবে।
সানজানা
