ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

এনার্জি ড্রিংকস পান করলে শরীরে যা হয়

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ২৭ জুন ২০২৫

এনার্জি ড্রিংকস পান করলে শরীরে যা হয়

ছবি: সংগৃহীত।

শুধু ক্লান্তি দূর নয়, হৃদযন্ত্রের উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে জনপ্রিয় এনার্জি ড্রিংক—এমনটাই জানাচ্ছেন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সুস্থ ও ফিট ব্যক্তিরাও এর মারাত্মক প্রভাবের বাইরে নন। ক্যাফেইন ও চিনি মিশ্রিত এই পানীয়গুলোকে অনেকেই ‘শক্তি ও চটপটতা’র উৎস ভাবলেও, বাস্তবে এগুলো হতে পারে হৃদরোগের নীরব কারণ।

এইচটি লাইফস্টাইলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে যশোদা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, কৌশাম্বির ক্যাথ ল্যাব ও কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান পরামর্শক ড. অসিত খন্না বলেন, “এনার্জি ড্রিংকে উচ্চমাত্রায় থাকে ক্যাফেইন, চিনি এবং উত্তেজক উপাদান যেমন গুয়ারানা, টাউরিন ও এল-কারনিটিন। এটি সাময়িকভাবে সজাগতা বাড়ালেও শরীরে চটজলদি শক্তি দেয়ার পাশাপাশি পরে ক্লান্তিও ডেকে আনে। নিয়মিত খেলে এতে নির্ভরতা তৈরি হয়।”

তিনি জানান, নিয়মিত এনার্জি ড্রিংক সেবনের ফলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে: হৃদস্পন্দন ও রক্তচাপে বৃদ্ধি (গড়ে ৫.২৩/৩.২৯ mmHg বৃদ্ধি), হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি, করোনারি ধমনী ছিঁড়ে যাওয়া (Spontaneous Coronary Artery Dissection), করোনারি ভাসোস্পাজম (Coronary vasospasm), ধমনির গঠন শক্ত হয়ে যাওয়া, ফলে অনিয়মিত স্পন্দন, হৃদপেশি দুর্বল হয়ে পড়া, প্লেটলেট জমাট বাঁধার প্রবণতা বৃদ্ধি, হৃদস্পন্দনের ছন্দে বিঘ্ন ঘটানো (Arrhythmia), দীর্ঘস্থায়ী QTc ইন্টারভ্যাল, ওজন বৃদ্ধি, স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি।

ড. খন্না আরও বলেন, “এনার্জি ড্রিংকের অতিরিক্ত সেবনে বাড়ে মনোযোগের অভাব, অতিরিক্ত সচলতা, ঘুমের ব্যাঘাত, আতঙ্কজনিত সমস্যা, এমনকি মনস্তাত্ত্বিক বিভ্রান্তির মতো সমস্যাও। ADHD ও স্মৃতিভ্রংশের মতো সমস্যা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে, যা পরোক্ষভাবে হৃদযন্ত্রকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে।”

দিল্লির সি.কে. বিড়লা হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের পরামর্শক ড. সঞ্জীব কুমার গুপ্ত বলেন, “উচ্চ মাত্রার চিনি ও ক্যাফেইনযুক্ত এই পানীয়গুলো তাৎক্ষণিকভাবে হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দেয়, রক্তচাপ বাড়ায় এবং উদ্বেগ বা অনিদ্রার সমস্যা তৈরি করে। নিয়মিত খেলে এগুলো সুস্থ ব্যক্তির শরীরেও হার্টের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যা মারাত্মক বিপদের দিকে নিয়ে যেতে পারে।”

তিনি বলেন, “যদিও মানসিকভাবে সাময়িক উৎসাহ পাওয়া যায়, কিন্তু শারীরিকভাবে তা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে। তাই সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। লেবেল পড়ে বোঝা এবং বিকল্প হিসেবে পানি কিংবা প্রাকৃতিক জুস বেছে নেওয়াই হৃদয় ও মস্তিষ্কের জন্য প্রকৃত স্বাস্থ্যকর পথ।”

সূত্র: https://short-link.me/11Fxj

মিরাজ খান

আরো পড়ুন  

×