ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৭ জুন ২০২৫, ১৩ আষাঢ় ১৪৩২

ফ্যাটি লিভার কমাতে মেনে চলুন এই ৬টি খাদ্যাভ্যাস

প্রকাশিত: ১৮:৫৮, ২৭ জুন ২০২৫

ফ্যাটি লিভার কমাতে মেনে চলুন এই ৬টি খাদ্যাভ্যাস

ছবি:সংগৃহীত

চর্বিযুক্ত লিভার (Fatty Liver) তখনই হয়, যখন অতিরিক্ত চর্বি লিভারের কোষে জমা হতে থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতাকে ব্যাহত করে এবং সিরোসিস, হেপাটাইটিসসহ নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

ভিয়েতনামের নিউট্রিহোম নিউট্রিশন সেন্টারের চিকিৎসক এনহ ডুং তুং মনে করেন, এই সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি। তিনি চর্বিযুক্ত লিভার কমাতে ছয়টি সহজ ও কার্যকর খাদ্য পরামর্শ দিয়েছেন:

১. ক্যালোরি গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ করুন
অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ ওজন বাড়ায়, আর ওজন বাড়লেই লিভারে চর্বি জমার আশঙ্কা বাড়ে। তাই খাবারে মোট ক্যালোরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার।

২. আঁশযুক্ত খাবার খান
সবুজ শাক, তাজা ফলমূল, বাদাম, বীজজাতীয় খাদ্য এবং পূর্ণ শস্যজাত খাবারে আঁশ থাকে প্রচুর। এগুলো পেট ভরিয়ে রাখে, বিপাক ক্রিয়া উন্নত করে এবং ক্ষতিকর চর্বির শোষণ কমায়।

৩. প্রাণিজ চর্বির বদলে উদ্ভিজ্জ তেল ব্যবহার করুন
ঘি বা মাখনের বদলে জলপাই তেল, রাইস ব্র্যান অয়েল, ক্যানোলা বা তিলের তেল ব্যবহার করলে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কমে। এতে লিভার বেশি সুরক্ষিত থাকে।

৪. সহজে হজম হয় এমন প্রোটিন গ্রহণ করুন
মাছ, মুরগির বুকের মাংস, টফু কিংবা মসুর ডালের মতো হালকা ও সহজে হজম হয় এমন প্রোটিন গ্রহণ করুন। লাল মাংস ও বেশি চর্বিযুক্ত মাংস এড়িয়ে চলুন।

৫. ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার খান
স্যালমন, ম্যাকেরেল মাছ, চিয়া বীজ এবং আখরোটে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড লিভারে প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং চর্বি বিপাকে ভূমিকা রাখে। এতে লিভার ক্ষয় ও ফাইব্রোসিস ঠেকানো সম্ভব।

৬. মদ ও জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন
মদ, বিয়ার, ওয়াইন কিংবা সফট ড্রিংকস লিভার ক্ষতির অন্যতম কারণ। একইভাবে বার্গার, ফ্রাইড চিকেন, আইসক্রিম, কেক, কলিজা বা অন্য অঙ্গ মাংস জাতীয় খাবার লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমাতে সাহায্য করে—এগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন।

চিকিৎসক তুং আরও বলেন, অতিরিক্ত লবণ খাওয়া রক্তচাপ বাড়ায়, শরীরে পানি ধরে রাখে এবং লিভারের ওপর চাপ ফেলে। তাই লবণ খাওয়ার পরিমাণও কমাতে হবে।

তবে একেবারে না খেয়ে থাকা বা অতি কঠোর ডায়েট করা ঠিক নয়। বরং দিনে ছোট ছোট পরিমাণে বারবার খেলে রক্তে চিনির পরিমাণ স্থিতিশীল থাকে, হজম শক্তি বাড়ে এবং অপ্রয়োজনীয় খিদে কমে।

পাশাপাশি প্রতিদিন কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হাঁটা, সাঁতার কাটা বা হালকা যোগব্যায়াম করলে লিভারের চর্বি হ্রাসে কার্যকর ফল পাওয়া যায়।

লিভার ভালো রাখতে হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধ ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে।

তাছাড়া, প্রাকৃতিক উপাদান যেমন ওয়াসাবিয়া জাপোনিকা ও সিলিমারিন (এস. মারিয়ানাম) গ্রহণ করলে হজমশক্তি বাড়ে, লিভার কোষ সুরক্ষিত থাকে এবং লিভারের রোগের অগ্রগতি ঠেকানো যায়।

স্বাস্থ্যই সম্পদ। সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা অনুসরণ করলে চর্বিযুক্ত লিভার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ—দু’টোই সম্ভব।

মারিয়া

×