
ছবি: জনকণ্ঠ
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কোতারায়া শপিং কমপ্লেক্স ও তার আশপাশের এলাকা একসময় ছিলো বাংলাদেশি, নেপালি, মায়ানমারীসহ হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিকদের প্রিয় মিলনমেলা। 'মিনি ঢাকা' বা 'মিনি বাংলাদেশ' নামে পরিচিত এই জায়গাটি শুধুমাত্র কেনাকাটা বা মোবাইল রিচার্জের জন্য নয়, বরং প্রবাসীদের মাঝে একধরনের আবেগ ও পরিচয়ের স্থান হয়ে উঠেছিল।
প্রায় দুই দশক আগে যখন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের আগমন বাড়ে তখন কোতারায়ার এই শপিং কমপ্লেক্সটি হয়ে ওঠে তাদের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ঠিকানা। হোটেল, মোবাইল সার্ভিসিং দোকান, মানি এক্সচেঞ্জ, হালাল রেস্টুরেন্ট, এমনকি মসজিদ সবই ছিল হাতের নাগালে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে হাজারো বাংলাদেশি এখানে জড়ো হতেন।
আজো অনেকেই বলেন, কোতারায়া ছিল যেনো আমাদের ছোট একটা বাংলাদেশ। সেই আগের সেই চিত্র এখন আর নেই।
বর্তমানে কোতারায়ায় গেলে চোখে পড়ে একধরনের নীরবতা। দোকানপাট আছে, মানুষজনও আছে, কিন্তু আগের মতো ভিড় বা প্রাণচাঞ্চল্য নেই। নতুন নতুন মেগামল ও সরকারি কড়াকড়ির কারণে এক সময়কার জমজমাট এই এলাকা এখন অনেকটাই গুরুত্ব হারিয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ হাসান বলেন, "আগে প্রতি শুক্রবার ও বিশেষ করে সাপ্তাহিক ছুটিরদিন রবিবার হাজার হাজার মানুষ আসতো। এখন যারা আসে, তারাও শুধু কাজ সেরে তাড়াতাড়ি চলে যায়।"
বর্তমানে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৯ লাখের বেশি। নির্মাণ, পরিষেবা, কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে তাঁদের অবদান অপরিসীম। তবে বর্তমানে বৈধতা জটিলতা, নিয়োগ দুর্নীতি ও শ্রম আইন নিয়ে কঠোরতার কারণে অনেকেই নানা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এর প্রভাব পড়েছে কোতারায়ার মতো জায়গাগুলোর ওপরেও।
কোতারায়া আজও আছে তবে তা যেন শুধুই সময়ের সাক্ষী। কিছু দোকানপাট বন্ধ, ভাড়া বেশি, অনেকের মতে এই মার্কেট এখন শুধু পুরনো স্মৃতি। তবুও যারা দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় আছেন, তাদের কাছে কোতারায়ার রয়েছে এক নস্টালজিক গুরুত্ব।
সাব্বির