ছবি: সংগৃহীত
ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে প্রত্যক্ষ সংঘাত আপাতত স্তিমিত হলেও, ফিলিস্তিনের গাজায় মৃত্যুর মিছিল ও মানবিক বিপর্যয় থেমে নেই। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসন গাজায় এক ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি করেছে, যেখানে প্রতিদিনই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় মোট ৫৬ হাজার ৭৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩১ হাজার ৮৪৮ জনেরও বেশি। নিহতদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে নতুন করে ৫ হাজার ৭৫৯ জন নিহত হয়েছেন।
গাজায় চলমান দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মধ্যেই ত্রাণ বিতরণেও দেখা যাচ্ছে ভয়াবহ চিত্র। গত চার সপ্তাহে বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) পরিচালিত ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে সহায়তা নিতে গিয়ে ৫৪৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ৪ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। গাজার কর্তৃপক্ষ এসব কেন্দ্রকে 'মৃত্যুফাঁদ' হিসেবে আখ্যায়িত করেছে, অভিযোগ করে যে ইসরায়েল খাদ্যকে গণহত্যার অস্ত্রে পরিণত করেছে। জাতিসংঘও এই ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থাকে 'ঘৃণ্য' বলে উল্লেখ করেছে।
সম্প্রতি ইসরায়েল উত্তর গাজায় ক্রসিং পয়েন্টগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যা ত্রাণ সরবরাহের সবচেয়ে সরাসরি পথ। এর ফলে দুর্ভিক্ষে থাকা হাজার হাজার মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ইউনিসেফ জানিয়েছে, গাজায় এখন মানবসৃষ্ট খরার সৃষ্টি হয়েছে এবং পানির অভাবে শিশুদের মৃত্যু শুরুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে বড় ধরনের যুদ্ধ সাময়িকভাবে থামলেও, গাজার অবরুদ্ধ মানুষের ওপর ইসরায়েলের সামরিক চাপ এবং অবরোধের কারণে তাদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বান সত্ত্বেও, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা এবং ত্রাণ সরবরাহে বাধার কারণে মানবিক পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে, এবং মৃত্যুর হাহাকার থামার কোনো লক্ষণ নেই।
সাব্বির
