ছবি: সংগৃহীত
শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি হলো ফুসফুস। আমরা প্রতিটি নিঃশ্বাসে বাতাস গ্রহণ করি এই ফুসফুসের মাধ্যমেই। কিন্তু পরিবেশ দূষণ, ধূমপান, জীবনযাপনের অনিয়ম বা অজ্ঞাত রোগের কারণে অনেক সময়ই ফুসফুস মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথমদিকে লক্ষণগুলো সাধারণ মনে হলেও এগুলোই হতে পারে বড় বিপদের পূর্বাভাস।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের চারটি লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি:
১. দীর্ঘস্থায়ী কাশি ও কফ
যদি আপনার কাশি তিন সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় এবং কফ বা রক্তমিশ্রিত কফ আসে, তবে তা হতে পারে ফুসফুস সংক্রমণ, টিউবারকুলোসিস (টিবি) বা এমনকি ফুসফুস ক্যানসারের ইঙ্গিত। অনেক সময় এটিকে সর্দি-কাশি ভেবে উপেক্ষা করা হয়, কিন্তু এ ধরনের কাশি অবশ্যই সতর্কতা দাবি করে।
২. শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি বেড়ে যাওয়া
হঠাৎ করে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, বুক ধড়ফড় করা বা হাঁটাচলা করলেই নিঃশ্বাসে সমস্যা অনুভব করা ফুসফুসের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার লক্ষণ। এটি ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD), অ্যাজমা বা ফুসফুসে জমে থাকা তরলের কারণে হতে পারে।
৩. বুকে ব্যথা
যদি বুকের মাঝখানে, বিশেষ করে শ্বাস নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভূত হয়, তবে তা হতে পারে প্লুরাল ইনফ্লেমেশন বা ফুসফুসের চারপাশে প্রদাহের ইঙ্গিত। এটি উপেক্ষা করলে নিউমোনিয়া বা ফুসফুসে পানি জমার মতো জটিলতা দেখা দিতে পারে।
৪. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও ওজন হ্রাস
ফুসফুসে দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা থাকলে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়, যার ফলে দেখা দেয় দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা, ওজন দ্রুত কমে যাওয়া ও কর্মক্ষমতা হ্রাস। অনেক সময় ফুসফুস ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবেও এই উপসর্গগুলো দেখা দিতে পারে।
এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত পালমোনোলজিস্ট বা বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। ধূমপান বন্ধ করুন এবং দূষিত পরিবেশ এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত এক্স-রে, সিটি স্ক্যান বা স্পাইরোমেট্রি পরীক্ষার মাধ্যমে ফুসফুসের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন। পুষ্টিকর খাদ্য ও শারীরিক ব্যায়াম অভ্যাস করুন।
ফুসফুসের রোগ অনেক সময় নীরবে আসে, কিন্তু ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে। তাই সাবধান থাকুন, লক্ষণগুলো বুঝুন, এবং সময়মতো চিকিৎসা নিয়ে বাঁচিয়ে তুলুন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের জীবনরেখা।
(এই প্রতিবেদনটি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে প্রস্তুত করা হয়েছে। কোনো উপসর্গে ভুগলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।)
ফারুক
