
ছবি: সংগৃহীত
লিভার বা যকৃৎ মানবদেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীর থেকে টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ দূর করে, হজমে সাহায্য করে এবং নানা গুরুত্বপূর্ণ হরমোন ও প্রোটিন উৎপাদন করে। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত ওষুধ সেবন, অ্যালকোহল গ্রহণ, ভাইরাল সংক্রমণসহ নানা কারণে লিভার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সময়মতো সাবধান না হলে তা সিরোসিস, ফ্যাটি লিভার বা এমনকি লিভার ক্যানসারের মতো জটিল রোগে রূপ নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিভার সমস্যা শুরু হলে শরীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে শুরু করে। নিচের ৪টি লক্ষণে বুঝতে পারবেন আপনার লিভার বিপদের মুখে:
১. ত্বক ও চোখে হলদে ভাব (জন্ডিস)
লিভারের কার্যকারিতা কমে গেলে বিলিরুবিন নামক পদার্থ শরীরে জমে গিয়ে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদ হয়ে যেতে পারে। একে জন্ডিস বলা হয়। এটি লিভারের সমস্যার সবচেয়ে সাধারণ এবং গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।
২. পেটে ফাঁপা ও ব্যথা
লিভারের রোগে অনেক সময় পেটের ডান পাশের ওপরের অংশে চাপ বা ব্যথা অনুভূত হয়। পেট ফুলে যাওয়া, তরল জমে যাওয়া বা অ্যাসাইটিস দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
৩. বমিভাব ও ক্ষুধামান্দ্য
লিভার ঠিকমতো কাজ না করলে হজমের সমস্যা হয়। এতে ঘন ঘন বমিভাব, অরুচি বা খাবারে আগ্রহ কমে যেতে পারে। এসব উপসর্গ একটানা চলতে থাকলে তা লিভারের কার্যক্ষমতার হ্রাসের ইঙ্গিত হতে পারে।
৪. অতিরিক্ত ক্লান্তি ও মানসিক ধীরতা
লিভার রোগের কারণে রক্তে টক্সিন জমতে শুরু করে, যা মস্তিষ্কের উপর প্রভাব ফেলে। এতে দেখা দিতে পারে অস্বাভাবিক ক্লান্তি, স্মৃতিভ্রষ্টতা বা মানসিক স্থবিরতা। একে হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি বলা হয়, যা দ্রুত চিকিৎসা না করালে মারাত্মক হতে পারে।
নিয়মিত রক্তপরীক্ষা ও লিভার ফাংশন টেস্ট (LFT) করানো। অ্যালকোহল ও ওষুধ গ্রহণে সতর্কতা। হেপাটাইটিস বি ও সি প্রতিরোধে টিকা ও নিরাপদ অভ্যাস। স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও পরিমিত চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো হার্বাল বা সাপ্লিমেন্ট না খাওয়া
লিভার নীরবে কাজ করে, তাই এর ক্ষতি শুরু হলে সহজে ধরা পড়ে না। তাই শরীরের ছোট ছোট সংকেতকে গুরুত্ব দিন, চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন এবং নিজের লিভারকে নিরাপদে রাখুন। মনে রাখবেন, সুস্থ লিভার মানেই সুস্থ জীবন।
(এই প্রতিবেদনটি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রস্তুত করা হয়েছে। উপসর্গ থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।)
ফারুক