ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

প্রতিসপ্তাহেই খাওয়া উচিত যেসব ফল: পুষ্টিবিদের পরামর্শ

প্রকাশিত: ১৩:০৮, ২২ জুন ২০২৫

প্রতিসপ্তাহেই খাওয়া উচিত যেসব ফল: পুষ্টিবিদের পরামর্শ

ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যকর হজম প্রক্রিয়া শুধু পেট ঠিক রাখে না—এটি হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধ করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, এমনকি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। গবেষণা বলছে, নিয়মিত ফল খাওয়া পরিপাকতন্ত্রে ভালো ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নিচের ১০টি ফল নিয়মিত খেলে শরীর পায় প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও ফাইবারের চমৎকার সমন্বয়।

১. ব্লুবেরি

পুষ্টিবিদ লন বেন-অ্যাশার বলেন, ‘ব্লুবেরি হচ্ছে একটি পুষ্টিবিশেষে সমৃদ্ধ ফল। এতে থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক ফ্ল্যাভোনয়েড অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা দেহে প্রদাহ কমায়।’ ব্লুবেরি ভিটামিন সি, কে ও ম্যাঙ্গানিজের ভালো উৎস। এতে থাকা দ্রবণীয় ফাইবার রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে এবং হৃদ্‌রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।

২. আপেল

আপেলে রয়েছে পলিফেনল নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সার, ডায়াবেটিস ও হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়। আপেল দ্রবণীয় ও অদ্রবণীয় উভয় প্রকার ফাইবার সমৃদ্ধ, যা হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে।

৩. কমলা

কমলা ভিটামিন সি-এর দারুণ উৎস হলেও এতে রয়েছে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ই এবং বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন। কমলার পাল্পে থাকা পলিফেনল কোষকে ক্ষয় থেকে রক্ষা করে। এটি ত্বকে কোলাজেন গঠনে সহায়তা করে, ফলে বয়সের ছাপ দেরিতে পড়ে।

৪. প্রুন (শুকনো বরই)

প্রুন বা শুকনো বরই হজমে সহায়ক। এতে থাকা উচ্চমাত্রার ফাইবার সহজে মলত্যাগে সহায়তা করে। পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন কে, যা রক্ত জমাট বাঁধা এবং হাড় গঠনে প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরিতে সহায়ক।

৫. রাস্পবেরি

প্রতি কাপ রাস্পবেরিতে থাকে ৮ গ্রাম ফাইবার—যা দৈনিক চাহিদার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। এটি ওজন নিয়ন্ত্রণ, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ, অন্ত্রের স্বাস্থ্য এবং রক্তে চিনির মাত্রা স্থির রাখতে সাহায্য করে। রাস্পবেরি ম্যাগনেসিয়ামের ভালো উৎস, যা পেশি, নার্ভ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।

৬. ব্ল্যাকবেরি

ব্ল্যাকবেরিতেও রয়েছে প্রচুর ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ভিটামিন এ, ই এবং কে। ব্লুবেরির মতো ব্ল্যাকবেরিও অ্যান্থোসায়ানিন সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধ করে।

৭. কলা

কলাতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার, যা ক্ষুধা কমায় ও ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া কলার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদ্‌স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।

৮. টমেটো

সবজি মনে হলেও টমেটো আসলে একটি ফল। এতে ভিটামিন এ-এর পাশাপাশি রয়েছে লাইকোপিন—একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যান্সারসহ দীর্ঘস্থায়ী রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। অনেকেই এতে থাকা লেকটিন নিয়ে চিন্তিত থাকলেও রান্না করে খেলে তা নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।

৯. তরমুজ

তরমুজ ৯২ শতাংশই পানি, ফলে এটি দারুণ হাইড্রেটিং ফল। এতে রয়েছে লাইকোপিন ও পটাশিয়াম, যা পেশি ব্যথা কমায় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। গরমকালে এটি বিশেষ উপকারী।

১০. অ্যাভোকাডো

অ্যাভোকাডোতে রয়েছে ভিটামিন ই ও কে—যা ত্বক, চুল ও নখ সুস্থ রাখে। এতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ওমেগা-৩ এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা খারাপ চর্বি প্রতিস্থাপন করে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও এসব ফল নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ রাখবে, বলছেন পুষ্টিবিদরা।

 

সূত্র: https://www.eatingwell.com/fruits-to-eat-every-week-11757821

রাকিব

×