ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

হার্ট অ্যাটাক করে ফেললে প্রাকৃতিকভাবে নিজেকে স্থিতিশীল রাখার উপায়

প্রকাশিত: ২২:১৭, ১০ জুন ২০২৫

হার্ট অ্যাটাক করে ফেললে প্রাকৃতিকভাবে নিজেকে স্থিতিশীল রাখার উপায়

ছবিঃ সংগৃহীত

আধুনিক সমাজের চাপ-টান, অসুষম খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামহীন জীবনধারা মানুষকে ক্রমশ হৃদরোগের ঝুঁকিতে ফেলছে। কর্মক্ষেত্রের চাপ, পারিবারিক সমস্যা, মূল্যস্ফীতি ও অস্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা — এসবই মানুষের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যকে দ্রুত খারাপ করে দিচ্ছে।

এমন একটি পরিস্থিতির কথা ভাবুন:

আপনি মহাখালীর জ্যামে ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়িতে বসে আছেন। হঠাৎ বুকের মাঝে তীব্র ব্যথা অনুভব করলেন। ব্যথা হাতের দিকে ছড়িয়ে পড়ছে, চোয়ালের নিচ থেকে মাথার দিকেও ছড়াচ্ছে। আপনি জানেন এটি কোনো সাধারণ ব্যথা নয় — এটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। কিন্তু আশেপাশে কোনো হাসপাতাল নেই। আপনি সিপিআর ট্রেনিং নিয়েছেন, কিন্তু কীভাবে নিজেকে সিপিআর দেবেন, তা কেউ শেখায়নি!

জানা গেছে, বেশির ভাগ হার্ট অ্যাটাকের সময় রোগী একাকী থাকেন এবং অজ্ঞান হওয়ার আগে মাত্র ১০ সেকেন্ড সময় পান। এই সময়টুকু কাজে লাগাতে পারলে প্রাণ বাঁচানো যেতে পারে।

কীভাবে নিজেকে স্থিতিশীল রাখবেন?

শান্ত থাকুন: প্রথমেই চেষ্টা করুন নিজেকে শান্ত রাখতে। তাড়াহুড়ো করলে হৃদস্পন্দন বাড়বে।
গভীর শ্বাস নিন: একটু করে গভীর শ্বাস নিন এবং ধীরে ধীরে ছেড়ে দিন। এটি শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়াবে।
জোরে কাশুন: কাশুন যেন বুকের ভিতর থেকে কাশি আসছে। প্রতিবার কাশার পর একটি গভীর শ্বাস নিন।
প্রতি ২ সেকেন্ড পর পর কাশুন: এভাবে ২ সেকেন্ড পরপর কাশতে থাকুন। এটি হৃৎপিণ্ডকে সংকুচিত করবে এবং রক্ত প্রবাহ বজায় রাখবে। যতক্ষণ না সাহায্য পান বা হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক হয়, ততক্ষণ এই পদ্ধতি চালিয়ে যান।

কেন কাজ করে এই পদ্ধতি?

গভীর শ্বাস: শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়ায়।
জোরে কাশি: হৃৎপিণ্ডকে সংকুচিত করে (স্কুইজ) এবং রক্ত প্রবাহ বজায় রাখে।
নিয়মিত কাশি: হৃৎপিণ্ডকে সঠিক রিদমে চালু রাখতে সাহায্য করে।
এটি হার্ট অ্যাটাকের সময় স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রাণ বাঁচাতে পারে। তবে মনে রাখবেন, এটি ডাক্তারি চিকিৎসার বিকল্প নয়। সম্ভব হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা পাওয়া অপরিহার্য।

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে কী করবেন?
যৌবনে জিম করুন: জিম করা হৃদযন্ত্রকে শক্তিশালী করে এবং মেটাবলিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে সাহায্য করে।
 

প্রৌঢ় ও বৃদ্ধদের জন্য অ্যারোবিকস: হালকা অ্যারোবিক ব্যায়াম যেমন হাঁটা, সাঁতার, জগিং হৃদযন্ত্রের জন্য খুব কার্যকর।

মেয়েদের জন্য অ্যারোবিকস সেরা ব্যায়াম: এটি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং হৃদযন্ত্রকে মজবুত রাখে।

সমাপ্তিতে:
হার্ট অ্যাটাক যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে। সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নিলে প্রাণ বাঁচানো যায়। তবে সবচেয়ে ভালো হয়, যদি নিয়মিত ব্যায়াম, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো যায়।

“প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়!” 

সূত্রঃ টেকটিউনস

ইমরান

×