
ছবি: সংগৃহীত
দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ব কেপ প্রদেশে অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন। প্রবল বৃষ্টিপাত ও তুষারপাতের কারণে সৃষ্ট এই দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাদেশিক প্রিমিয়ার অস্কার মাবুয়ানে বলেন, ‘আমরা যখন এই মুহূর্তে কথা বলছি, তখনও নতুন করে মরদেহ উদ্ধার করা হচ্ছে।’ পুলিশ সূত্রে প্রাপ্ত এই মৃত্যুর হিসাব বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।
ভেসে গেছে স্কুলবাস, প্রাণ গেল ৬ শিক্ষার্থীর
বন্যায় সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার, যখন একটি স্কুলবাস নদীর স্রোতে ভেসে গেলে ছয়জন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় আরও চারজন শিক্ষার্থী নিখোঁজ রয়েছে বলে জানান মাবুয়ানে।
বুধবার সকালে খালি অবস্থায় স্কুলবাসটি উদ্ধার করা হলেও তাতে কেউ ছিল না। তবে আগের দিন তিনজন শিক্ষার্থীকে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত, ক্ষতিগ্রস্ত স্কুল ও হাসপাতাল
প্রাদেশিক সরকার জানিয়েছে, বন্যায় পূর্ব কেপ ও পাশের কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশে শত শত ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৫০০ মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫৮টি স্কুল ও ২০টি হাসপাতাল। হাজার হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
‘আমি জীবনে কখনও এমন কিছু দেখিনি’, বলেন মাবুয়ানে।
রাষ্ট্রপতির শোক ও ত্রাণ কার্যক্রম শুরু
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ক্ষতিগ্রস্ত ও শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেছেন, পূর্ব কেপে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র একযোগে কাজ করছে।
আবহাওয়াবিদরা আগেই সতর্ক করেছিলেন যে, দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রবল শক্তিশালী আবহাওয়া ফ্রন্ট বয়ে যেতে পারে, যার ফলে কিছু এলাকায় প্রবল বৃষ্টি এবং অন্যত্র তুষারপাত হবে।
বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকাজুড়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে ক্ষয়ক্ষতির পুরো চিত্র এখনো পাওয়া যায়নি। নিখোঁজদের খোঁজে অভিযান অব্যাহত রেখেছে উদ্ধারকারী দল।
সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
রাকিব