
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনার পুরো পদ্ধতি এখন দ্রুতগতিতে ডিজিটালাইজেশন ও অটোমেশন-এর আওতায় আনা হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে গঠিত একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম এর মাধ্যমে এখন ভূমি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর ফলে জমির মালিকদের জন্য নামজারি প্রক্রিয়া আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত হয়েছে।
অটোমেশন কীভাবে কাজ করছে?
আগে দলিল নিবন্ধনের পর জমির মালিককে নিজ উদ্যোগে ভূমি অফিসে গিয়ে নামজারির জন্য আবেদন করতে হতো। এখন ২১টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে পরীক্ষামূলকভাবে স্বয়ংক্রিয় নামজারি পদ্ধতি চালু হয়েছে। এর অর্থ হলো, দলিল রেজিস্ট্রির সঙ্গে সঙ্গেই তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে এসিল্যান্ড অফিসে চলে যাবে এবং নামজারির কাজ শেষ হয়ে যাবে—জমির মালিককে আলাদা করে কিছু করতে হবে না।
২০২৫ সালের জুলাইয়ের মধ্যেই দেশের সব সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে এই অটোমেশন চালু হবে, জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
এখন প্রশ্ন—যাদের নামজারি এখনো হয়নি, তারা কী করবেন?
যাদের জমি পুরনো, যেমন ১৯৫০, ১৯৯০ বা তারও আগে ক্রয় করেছেন কিন্তু এখনো নামজারি করেননি, তাদের জন্য আগের প্রচলিত নিয়মই বলবৎ রয়েছে। অর্থাৎ তাদেরকে অনলাইন বা সশরীরে ভূমি অফিসে গিয়ে নামজারি আবেদন করতে হবে।
নতুনভাবে যেসব দলিল রেজিস্ট্রি হচ্ছে, যেমন—
-
সাব-কবলা দলিল
-
হেবা দলিল
-
এওয়াজ বদল দলিল
-
বণ্টননামা দলিল
-
হেবাবিল এওয়াজ দলিল
-
নাদাবি দলিল
এসব ক্ষেত্রে দলিলের তথ্য অটোমেশনের মাধ্যমে সরাসরি এসিল্যান্ড অফিসে চলে যাবে, ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি সম্পন্ন হবে।
কেন নামজারি জরুরি?
অনেকেই মনে করেন দলিল থাকলেই জমির মালিকানা নিশ্চিত হয়। কিন্তু সরকারি নথিতে নাম না থাকলে আপনি আইনিভাবে সেই সম্পত্তির স্বীকৃত মালিক নন। ভূমি অফিস ও জরিপ বিভাগের কাছে আপনার নাম থাকাটাই আসল মালিকানার প্রমাণ। এটি না থাকলে:
-
জমি বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে না,
-
ওয়ারিশ ভাগবাটোয়ারায় সমস্যা হবে,
-
ব্যাংক লোন বা মামলা সংক্রান্ত ঝামেলা হতে পারে।
সরকার কেন অটোমেশন চালু করল?
-
ঘুষ ও দালালচক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে
-
জনগণের ভোগান্তি কমাতে
-
সময় ও খরচ বাঁচাতে
-
সরকারি রাজস্ব আদায় বাড়াতে
-
ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে
তেজগাঁও ভূমি ভবনসহ বিভিন্ন অফিসে এখন সরাসরি পরামর্শ দিয়ে দ্রুত নামজারি করে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সারকথা:
যারা এখনো জমির নামজারি করেননি, তারা অবিলম্বে অনলাইনে বা সরাসরি গিয়ে প্রচলিত নিয়মে আবেদন করুন।
আর যারা এখন থেকে নতুন দলিল রেজিস্ট্রি করবেন, তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি হয়ে যাবেন—তাদের আলাদা করে কিছু করতে হবে না।
ইমরান