
ছবিঃ সংগৃহীত
ব্যাংকে চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের সময় অনেকেই লক্ষ্য করে থাকেন, চেকের পিছনে দুটি স্বাক্ষর দিতে হয়। কিন্তু কেন দিতে হয় দুটি স্বাক্ষর? এই দুটি স্বাক্ষরের তাৎপর্যই বা কী? এ বিষয়ে অনেক গ্রাহকের মনেই নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায়।
ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে ব্যাংকিং সিস্টেম ডিজিটাল হলেও, এই দুটি স্বাক্ষরের প্রচলন এসেছে মূলত পুরনো ম্যানুয়াল ব্যাংকিং ব্যবস্থার সময় থেকে। তখন ব্যাংকে কোনো লেনদেনের তথ্য কম্পিউটারে সংরক্ষিত থাকত না, বরং বড় লেজার বইতে হাতেকলমে লিপিবদ্ধ করা হতো। ফলে টাকা তোলার সময় তাৎক্ষণিক যাচাই করা সম্ভব হতো না।
দুটি স্বাক্ষরের ব্যাখ্যা
চেকের পেছনে প্রথম স্বাক্ষরটি বোঝায়—গ্রাহক চেকটি কাউন্টারে জমা দিয়েছেন বা টাকা পাওয়ার দাবী করেছেন। এটি একটি পূর্বধারণা হিসেবে চিহ্নিত থাকে যে, উক্ত চেকটি যাচাইয়ের জন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে।
এরপর যাচাই-বাছাই ও প্রক্রিয়া শেষে যখন গ্রাহক টাকা নিতে আসেন, তখন আবার দ্বিতীয়বার স্বাক্ষর করতে হয়। দ্বিতীয় স্বাক্ষরটি নির্দেশ করে যে—গ্রাহক টাকা বুঝে পেয়েছেন। অর্থাৎ, এটি হচ্ছে "রিসিভড" স্বাক্ষর।
ব্যাংক সূত্র জানায়, এই দুটি স্বাক্ষর ভবিষ্যতে কোনো ধরনের জটিলতা এড়াতে সহায়তা করে। কারণ যদি কখনো গ্রাহক দাবি করেন যে তিনি টাকা পাননি, তাহলে দ্বিতীয় স্বাক্ষরের অস্তিত্ব ব্যাংকের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।
আধুনিক ব্যাংকিংয়ে কী হয়?
বর্তমানে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় তথ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষিত হওয়ায় লেনদেন অনেক সহজ ও দ্রুত হয়েছে। এখন গ্রাহক চেক নিয়ে কাউন্টারে গেলে কর্মকর্তারা চেক যাচাই করে চেকের পিছনে দুটি স্বাক্ষর নেওয়ার পর টাকা বুঝিয়ে দেন। তবে অতীতের মতো টোকেন সিস্টেম বা বড় লেজার বই ঘেঁটে দেখা হয় না।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলেন, এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। পুরো ব্যাংকিং প্রক্রিয়াই এখন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকে। ফলে চেক জমা দেওয়া এবং টাকা উত্তোলন—উভয় ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা বজায় থাকে।
তবে স্মরণ রাখতে হবে—দুটি স্বাক্ষরের মধ্যে প্রথমটি চেক জমাদানের প্রমাণ, দ্বিতীয়টি টাকা পাওয়ার স্বীকৃতি। তাই স্বাক্ষর দেওয়ার আগে ভালোভাবে যাচাই করে নেওয়ার পরামর্শ দেন ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা।
ইমরান