ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শেখ হাসিনার ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’ বার্তা কাদের জন্য ছিল?

প্রকাশিত: ১২:১৩, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:৪৭, ১১ জুন ২০২৫

শেখ হাসিনার ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’ বার্তা কাদের জন্য ছিল?

ছবি: সংগৃহীত

সকালে ঘুম ভাঙার পর চোখে পড়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তা—যাতে লেখা ছিল ‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’। পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বার্তার অর্থ বুঝতে সময় লাগেনি—এটি ছিল দেশ ত্যাগের চূড়ান্ত নির্দেশ।

এর আগে ৩ আগস্ট, শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের মৌখিকভাবে একই নির্দেশ দেন। এবার নিজেই মেসেজ করে তা নিশ্চিত করেন। সম্প্রতি তার এক আত্মীয় ঘনিষ্ঠজনদের এসব তথ্য জানান। তিনি বাংলাদেশি এক গণমাধ্যমকে বলেন, “যদি সময়মতো দেশ না ছাড়তেন, তাহলে এখন হয়তো জেলে থাকতে হতো।”

অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার ওই আত্মীয় ছিলেন সাবেক এমপি এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক ব্যক্তি। শেখ লুৎফুর রহমানের পক্ষের আত্মীয়। কারফিউয়ের মধ্যেই ৪ আগস্ট তিনি পরিবারসহ দেশ ছাড়েন।

জানা যায়, শেখ হাসিনা শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা বা অন্য কারও প্রতি এমন বার্তা পাঠাননি। আত্মীয়দের নিরাপদে বিদেশে পৌঁছানো নিশ্চিত হওয়ার পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে ভারত চলে যান। পরে শেখ রেহানা লন্ডন যান, যেখানে তার সন্তানরাও আগে থেকেই ছিলেন।

হত্যা, গুম, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মতো অভিযোগে আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতা, মন্ত্রী ও এমপি এখন কারাগারে। তবে শেখ হাসিনার অধিকাংশ আত্মীয় নিরাপদে বিদেশে অবস্থান করছেন—যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর এবং প্রতিবেশী ভারতে।

তবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের একজন সদস্য—সেরনিয়াবাত মঈনউদ্দিন আবদুল্লাহ—গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি শেখ হাসিনার ফুপাত ভাই, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর ছেলে। ধারণা ছিল, প্রয়াত উপদেষ্টা হাসান আরিফের পারিবারিক ঘনিষ্ঠতা থাকায় তিনি গ্রেপ্তার হবেন না। কিন্তু গত বছরের অক্টোবরেই তাকে আটক করা হয়।

ওই সাবেক এমপি জানান, শেখ হাসিনা ৩ আগস্ট বিকেলেই বুঝতে পেরেছিলেন সরকার টিকছে না। তিনি আত্মীয়দের বলেন, “পরিস্থিতি ভালো না, জীবন বাঁচাতে দেশ ছাড়তে হবে।” এরপর একে একে আত্মীয়-স্বজন দেশ ছাড়েন।

তিনি আরও দাবি করেন, ৩ আগস্ট সিঙ্গাপুর থেকে ফিরে আসা ঢাকা দক্ষিণ সিটির তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকেও বিমানবন্দরে শেখ হাসিনার মৌখিক নির্দেশ জানানো হয়। এরপর তাপস সিঙ্গাপুরেই ফিরে যান।

এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শেখ হাসিনা নিশ্চিত হন, আন্দোলন দমন আর সম্ভব নয়। তাই আত্মীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মোবাইলে পাঠান সেই বিখ্যাত চার শব্দের বার্তা—‘নো ওয়ান স্টে হিয়ার’।

আবির

আরো পড়ুন  

×