
সারা দেশে চলমান বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে (বিডিএস) কার্যক্রমে ভূমি মালিকদের অসচেতনতা ও প্রস্তুতির অভাবে রেকর্ড ভুল হওয়ার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এতে অনেক ক্ষেত্রে প্রকৃত মালিকের নাম বাদ পড়ে অন্যের নামে রেকর্ড সম্পন্ন হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জরিপ চলাকালীন সময়েই ভূমি মালিকদের কিছু করণীয় বিষয়ে সজাগ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জমি রেকর্ডে কোনো ভুল হলে তা পরে শুধরে নিতে হয়রানি ও সময়ের পাশাপাশি ব্যয়বহুল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। তাই জরিপের আগে থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। এই প্রেক্ষাপটে ভূমি মালিকদের জন্য চারটি গুরুত্বপূর্ণ করণীয় তুলে ধরা হলো-
প্রথমত, জমির মালিকানার প্রমাণাদি দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। জরিপকারীদের সামনে যেন আপনি সঠিক কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেন, সেজন্য দলিল, নামজারীকৃত খতিয়ান, সর্বশেষ ভূমি উন্নয়ন করের দাখিলা ইত্যাদি আগেভাগেই সংগ্রহ করে রাখতে হবে। কারণ, ইতোমধ্যে অনেক জেলায় বিডিএস জরিপ শুরু হয়ে গেছে।
দ্বিতীয়ত, জমির সীমানা নির্ধারণ এবং তা সঠিকভাবে চিহ্নিত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। জমির আইল সোজা করে রাখা, সীমানা পিলার বসানো এবং একটি সঠিক নকশা প্রস্তুত রাখা জরুরি। জরিপকারীরা মাঠ পর্যায়ে জমির সীমানা সহজে চিহ্নিত করতে পারেন এটি নিশ্চিত করার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে মালিকেরই।
তৃতীয়ত, জরিপকারীদের পরিদর্শন শেষে মাঠ পর্যায়ের পর্চা বা খানপুরি গ্রহণ এবং যাচাই করতে হবে। এতে জমির দাগ নম্বর, খতিয়ান, মালিকের নাম, ঠিকানা ও দলিল নম্বর উল্লেখ থাকে। এটি প্রস্তুতের পর মালিককে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, তাই সেটি গ্রহণের সময় সব তথ্য সতর্কভাবে যাচাই করা জরুরি।
চতুর্থত, সব তথ্য ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ত্রুটি থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আপত্তি জানাতে হবে। দাগ বিভাজন, নাম বা ঠিকানায় ভুল থাকলে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে সংশোধনের জন্য ৩০ দিনের মধ্যে আবেদন করতে হবে। এই সময়সীমা পেরিয়ে গেলে রেকর্ড চূড়ান্ত প্রিন্টে চলে যাবে, যা পরে সংশোধনের জন্য আপনাকে আদালতের আশ্রয় নিতে হতে পারে।
ভূমি রেকর্ড সংশোধন নিয়ে পরবর্তীতে আইনি জটিলতায় না জড়াতে চাইলে এখন থেকেই সচেতন হওয়াই শ্রেয়। বিডিএস জরিপে অংশগ্রহণের সময় ভূমি মালিকদের যথাযথ প্রস্তুতি ও অংশগ্রহণই নিশ্চিত করবে সঠিক মালিকানা রেকর্ড।
সূত্র:https://tinyurl.com/y4uv2apn
আফরোজা