ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইরান থেকে মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: শুরু হচ্ছে ভয়াবহ যুদ্ধ!

প্রকাশিত: ১২:০৫, ১২ জুন ২০২৫; আপডেট: ১২:০৬, ১২ জুন ২০২৫

ইরান থেকে মার্কিন নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র: শুরু হচ্ছে ভয়াবহ যুদ্ধ!

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার মাঝে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কায় উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মার্কিন প্রশাসনের আশঙ্কা—যুক্তরাষ্ট্রের অনুমতি ছাড়াই ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে, যদি ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে চলমান পারমাণবিক আলোচনা ভেঙে পড়ে।

এই উদ্বেগের মাঝেই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, মধ্যপ্রাচ্য—বিশেষ করে ইরান থেকে—মার্কিন নাগরিক ও কর্মীদের সরিয়ে নেওয়া হবে। ট্রাম্প বলেন, "এই অঞ্চলটি এখন বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।" এদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ইরাক থেকে কিছু কর্মীকে স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (পেন্টাগন) মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন মার্কিন ঘাঁটি থেকে সামরিক পরিবারের সদস্যদের চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

বর্তমানে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে দেব না। খুব সরলভাবে বললে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র পেতে পারে না।”

গত মাসে অ্যাক্সিওস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ইরানের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি না হলে ইসরায়েল দ্রুত হামলার জন্য প্রস্তুত। সূত্রের বরাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আলোচনার ব্যর্থতার জন্য অপেক্ষা করছেন এবং এমন একটি মুহূর্ত চাইছেন, যখন ট্রাম্প হতাশ হবেন এবং হামলার অনুমতি দেবেন।

ট্রাম্পও ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। নিউইয়র্ক পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি দিন দিন কম আশাবাদী হচ্ছি যে তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধে রাজি হবে।”

সম্প্রতি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে যে, ইসরায়েল হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সম্মতি ছাড়া ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে। এতে তেহরানের পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো টার্গেট হতে পারে, যা পুরো অঞ্চলে বড় ধরনের সংঘাতের সূত্রপাত করতে পারে।

ইরান বহুবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, ইসরায়েলের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রধান মিত্র হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রও এই সংঘাতে ভুগবে। বুধবার ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আজিজ নাসিরজাদে বলেন, “যদি আমাদের ওপর হামলা হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের ঘাঁটিগুলো আমাদের পাল্টা হামলার লক্ষ্যবস্তু হবে।”

এদিকে ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব ইউরোপ ও উত্তর আফ্রিকার মার্কিন দূতাবাসগুলোকে জরুরি অ্যাকশন কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে। ওই অঞ্চলে নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবেলায় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য দূতাবাসগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বাহরাইন ও কুয়েত থেকেও স্বেচ্ছামূলক প্রস্থানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

পরিস্থিতি বিবেচনায় বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ সতর্কতা হালনাগাদ করেছেন। তিনি বলেন, “১১ জুন, আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে পররাষ্ট্র দপ্তর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে নিযুক্ত অ-জরুরি মার্কিন কর্মীদের ফিরে আসার নির্দেশ দিয়েছে।”

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন তেল-সমৃদ্ধ অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। ইরাক, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি। অঞ্চলজুড়ে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে এসব ঘাঁটি এখন বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছে।

ফারুক

×