
সংগৃহীত
কোরবানির ইদ মানেই রকমারি মাংসের পদে ভরপুর খাবার টেবিল। কাবাব, কালাভুনা, রেজালা, কোরমা একেক বাড়িতে একেক স্বাদ। কিন্তু এই আনন্দের মধ্যেই অনেকের শরীরে শুরু হয় হজমের গোলমাল। পেটের গন্ডগোল, গ্যাস, ডায়রিয়া কিংবা অস্বস্তি এসব সমস্যা যেন ঈদের পরদিন থেকেই দেখা দেয়।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, কোরবানির মাংস খাওয়া যাবে, তবে পরিমিতভাবে। আর যাদের আগে থেকেই বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা রয়েছে, তাদের আরও বেশি সাবধান থাকা জরুরি।
গরুর মাংসে আছে প্রচুর প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, জিংক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস ও অন্যান্য উপকারী উপাদান। প্রতি ১০০ গ্রাম মাংসে থাকে প্রায় ২৬ গ্রাম প্রোটিন।
তবে অতিরিক্ত খেলে এই প্রোটিনই হতে পারে হজমে বড় বাধা। বিশেষ করে যাদের কিডনি সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা হার্টের অসুখ রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বেশি মাংস খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
একজন সাধারণ মানুষের দৈনিক প্রোটিন চাহিদা প্রায় ৫০ গ্রাম। সে হিসেবে দিনে ১০০ গ্রাম মাংস খেলে প্রোটিনের এক-তৃতীয়াংশ পূরণ হয়। তবে কিডনি রোগীদের জন্য এই চাহিদা অর্ধেক, আর গর্ভবতী নারীদের জন্য প্রোটিনের পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, মাংসের চর্বিযুক্ত অংশ, কলিজা কিংবা মগজ খেতে গেলে বেশি কোলেস্টেরল শরীরে ঢোকে। তাই এসব অংশ এড়িয়ে চলাই ভালো।
এ সময় খাবারের তালিকায় কিছু উপাদান রাখলে হজম সহজ হয়। যেমন পেঁপে। এতে থাকা প্যাপেইন নামক উপাদান দ্রুত প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে। ঠিক তেমনি আনারসেও রয়েছে ব্রোমেলেইন, যা হজমে সহায়ক।
মাংস খাওয়ার সময় যতটা সম্ভব শাকসবজি ও সালাদ রাখতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। খাবারের সঙ্গে বাদামি চালের ভাত বা আটার রুটি খাওয়া ভালো। পোলাও, লুচি, পরোটা, বিরিয়ানি কমিয়ে দিলে হজম সহজ হয়।
পুষ্টিবিদরা আরও বলেন, দিনে একবার বা দুইবার মাংস খাওয়া যেতে পারে, তবে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ফিরনি, কাস্টার্ড, জর্দা, মিষ্টি দইয়ের মতো মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা। টক দই রাখা যেতে পারে খাদ্যতালিকায়।
শেষ কথা, ঈদের আনন্দ হোক স্বাস্থ্যের সঙ্গেই। মাংস খান, কিন্তু বুঝে শুনে, স্বাস্থ্য ঠিক রেখে। তবেই কোরবানির ইদ হবে স্বস্তির, তৃপ্তির এবং সত্যিকারের উৎসবের।
হ্যাপী