ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চীনের প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের কৌশল

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:১২, ১২ জুন ২০২৫

চীনের প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণে ওয়াশিংটনের কৌশল

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্র চীনের উন্নত প্রযুক্তি পাওয়ার পথ রোধ করতে নানা ধরনের কৌশল চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, এমন প্রযুক্তি যেগুলোর সামরিক কাজে ব্যবহার হতে পারে—যেমন অত্যাধুনিক কম্পিউটার চিপ বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)। এ উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র বারবার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ (export control) আরোপ করেছে।

এই রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের কারণে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির (চীন ও যুক্তরাষ্ট্র) মধ্যে একটি ঠান্ডা যুদ্ধের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কিছুদিন আগে লন্ডনে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়। সেখানে আবারও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ইস্যুটি আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, “আমি আট বছর ধরে চীনের সঙ্গে আলোচনা করছি। এমন একটি বৈঠকও হয়নি যেখানে তারা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কথা বলেনি।”

ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ

২০১৮ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চীনের প্রযুক্তিপ্রাপ্তি ঠেকাতে প্রথমবারের মতো রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবহার করে। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোকে চীনের টেলিকম জায়ান্ট ZTE-তে পণ্য বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যদিও পরে প্রতিষ্ঠানটি ১ বিলিয়ন ডলার জরিমানা দিয়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে।

এরপর ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সবচেয়ে বড় টেলিকম কোম্পানি Huawei-কে একটি কালো তালিকায় রাখে। এর ফলে তারা আমেরিকান প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি কিনতে পারেনি।

বাইডেন প্রশাসনের পদক্ষেপ

জো বাইডেন ক্ষমতায় আসার পর কৌশল আরও বিস্তৃত হয়। এবার শুধু নির্দিষ্ট কোম্পানি নয়, চীনের সামগ্রিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নকেই লক্ষ্যবস্তু করা হয়, বিশেষ করে যেসব প্রযুক্তির সামরিক ব্যবহার রয়েছে, যেমন: এআই ও সেমিকন্ডাক্টর।

বাইডেন প্রশাসন এমনকি ইউরোপের মিত্রদের চাপ দিয়েছে যাতে তারা চীনে উন্নত চিপ তৈরির যন্ত্রপাতি বিক্রি না করে। বিশেষ করে নেদারল্যান্ডসের প্রতিষ্ঠান ASML – যারা অত্যাধুনিক লিথোগ্রাফি মেশিন বানায় – তাদের রপ্তানি আটকে দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফলভাবে লবিং করে।

ফের ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ

২০২৫ সালে আবারো ক্ষমতায় ফিরে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন বাইডেনের আমলের একটি বড় নিয়ম বাতিল করে দেয় – যেটি এআই চিপ রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল। যদিও তারা বলেছে নতুন নিয়ম আসবে, কিন্তু সেটা কেমন হবে তা এখনো স্পষ্ট নয়।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র Nvidia-র মতো চিপ নির্মাতাদের ওপরও নতুন চাপ সৃষ্টি করেছে। Nvidia নিজেদের চিপ কিছুটা দুর্বল করে চীনে বিক্রি করার উপায় বের করেছিল। কিন্তু এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র জানায়, এখন থেকে এসব চিপ বিক্রি করতে বিশেষ লাইসেন্স লাগবে। এতে Nvidia ৫.৫ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির মুখে পড়ে।

একই সঙ্গে, Nvidia-র বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে মার্কিন কংগ্রেসের চীন বিষয়ক কমিটি। অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানটি চীনা এআই স্টার্টআপ DeepSeek-কে অবৈধভাবে প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মুমু ২

×