
ছবি: সংগৃহীত
আপনি কি অল্পতেই রেগে যাচ্ছেন? ইদানিং নিজের বা এমন কাউকে দেখছেন যার মেজাজ খুব খারাপ? মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন আচরণের পেছনে থাকতে পারে উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার গভীর প্রভাব। সম্প্রতি নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিওবার্তায় এই বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেছেন বিশিষ্ট মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মেখলা সরকার।
তিনি বলেন, ‘যারা অল্পতেই খুব রেগে যান বা সব সময় বিরক্ত থাকেন, তাদের অনেকেই নানা রকম উদ্বেগজনিত মানসিক রোগে ভুগছেন।’
কোন কোন মানসিক রোগে দেখা যায় এমন উপসর্গ?
ডা. মেখলা সরকার মূলত তিন ধরনের উদ্বেগজনিত সমস্যা তুলে ধরেন:
প্যানিক ডিসঅর্ডার:
রোগী হঠাৎ করে এক ধরনের মৃত্যুভীতি বা মারাত্মক শারীরিক অস্বস্তির শিকার হন। মনে হয় এখনই কিছু একটা খারাপ হতে যাচ্ছে—মরে যাবো, পড়ে যাবো—এমন আতঙ্ক ভর করে।
ফোবিক ডিসঅর্ডার:
বাস, ট্রেন বা কোনো বদ্ধ জায়গা, এমনকি একা থাকা—এই পরিস্থিতিতে ভয়ংকর অস্থিরতা তৈরি হয়। সাধারণ সময়ে স্বাভাবিক থাকলেও নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ভীতি তীব্র হয়ে ওঠে।
জেনারাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার (GAD):
প্রতিনিয়ত ছোটখাটো বিষয় নিয়েও রোগী দুশ্চিন্তায় থাকেন। ঘরে-বাইরে সব জায়গাতেই উদ্বেগের ছায়া থাকে।
এই তিনটি সমস্যার মধ্যেই একটিই সাধারণ উপাদান, তা হলো উদ্বেগ। আর এই উদ্বেগ থেকেই জন্ম নেয় খিটখিটে মেজাজ ও অতিরিক্ত রাগ।
সোশ্যাল অ্যাংজাইটিও হতে পারে কারণ
অনেকের আবার সোশ্যাল অ্যাংজাইটি বা সামাজিক ভীতি থাকে। তারা প্রেজেন্টেশনে কথা বলতে, মিটিংয়ে অংশ নিতে বা কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়তে ভয় পান। এতে একধরনের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়, যা মানসিক অস্থিরতা বাড়িয়ে দেয়।
চিকিৎসার উপায় কী?
ডা. মেখলা সরকার পরামর্শ দেন, যেকোনো রিলাক্সেশন টেকনিক, যেমন গভীর শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন, এসব রোগের ক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে।
প্যানিক অ্যাটাক: কগনেটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি (CBT) কার্যকর।
জেনারেল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার: CBT প্রয়োগ হয় দীর্ঘমেয়াদে।
ফোবিক ডিসঅর্ডার: CBT-এর পাশাপাশি এক্সপোজার থেরাপি খুবই কার্যকর।
এছাড়া প্রয়োজন অনুসারে অন্যান্য সাইকোলজিক্যাল ম্যানেজমেন্ট এবং কখনো কখনো ওষুধ প্রয়োগ করা হয়।
ডা. মেখলা সরকারের মতে, ‘অল্পতে রেগে যাওয়া কেবল স্বভাব নয়, তা হতে পারে মানসিক সমস্যার প্রতিফলন। তাই সময়মতো বুঝে চিকিৎসা নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
সূত্র: https://www.facebook.com/share/v/1VjrLvEW36/
রাকিব