
ছবি: প্রতীকী
ইরান, যাকে আমেরিকা বছরের পর বছর ধরে নিষেধাজ্ঞা আর সামরিক হুমকির মধ্যে রেখেছে, আজ সেই ইরানের সামরিক উদ্ভাবনই যেন প্রশংসার ঝড় তুলেছে মার্কিন ভূখণ্ডে।
ইরানের সস্তা কিন্তু প্রাণঘাতী ড্রোন দেখে এখন মুগ্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি তিনি নিজ দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পকে আহ্বান জানিয়েছেন—‘আমাদের চাই ইরানের মতো সাশ্রয়ী ও কার্যকর ড্রোন।’
আলোচিত মধ্যপ্রাচ্য সফরে থাকা অবস্থায় কাতার থেকে সাংবাদিকদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘ইরান খুব ভালো ড্রোন তৈরি করে। দাম কম, কিন্তু গতি এবং বিধ্বংসীক্ষমতা—দু’দিক থেকেই অসাধারণ।’
ট্রাম্ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন ‘হাজার হাজার সাশ্রয়ী ড্রোন তৈরি করতে’, যেগুলোর দাম হবে সর্বোচ্চ ৩৫-৪০ হাজার ডলার। কিন্তু এক মার্কিন কোম্পানি তাকে ৪১ মিলিয়ন ডলারের একটি ড্রোন দেখালে, ট্রাম্প সরাসরি হতাশা প্রকাশ করেন।
১৯৮০-এর দশকে যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও মূল বিপ্লব ঘটে ২০১১ সালে, যখন ইরান একটি মার্কিন গুপ্তচর ড্রোন ভূপাতিত করে তার প্রযুক্তি হাতিয়ে নেয়। এরপর একে একে তৈরি হয় সিমরক, শাহেদ ১২৯ এবং শাহেদ ১৩৬—যার মধ্যে শেষেরটি সবচেয়ে আলোচিত।
শাহেদ ১৩৬ হলো ‘কামিকাজী ড্রোন’, যেটি বিস্ফোরক নিয়ে নিজেই শত্রু লক্ষ্যবস্তুর ওপর গিয়ে বিস্ফোরিত হয়। এই ড্রোনের সাশ্রয়ী দাম, নির্মাণে সরলতা এবং ভয়ঙ্কর বিধ্বংসীক্ষমতা একে পরিণত করেছে আধুনিক যুদ্ধের ‘গেম চেঞ্জার’-এ।
বর্তমানে ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া ইরানি ড্রোন ব্যবহার করছে—যা প্রমাণ করে, ইরানের এই ড্রোন প্রযুক্তি আন্তর্জাতিক যুদ্ধক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তবে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নামে কোটি কোটি ডলার খরচ করেও যুক্তরাষ্ট্র এখনো সাশ্রয়ী ও গণহারে ব্যবহারের উপযুক্ত ড্রোন তৈরি করতে ব্যর্থ। সেই প্রেক্ষাপটেই ইরান হয়ে উঠছে এক ‘অদ্ভুত অনুকরণীয় শক্তি’, যা পশ্চিমাদের কাছেও এখন শিক্ষণীয় উদাহরণ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=snjGtx9H8Qc
রাকিব