ছবিঃ সংগৃহীত
বিলাসবহুল বেডরুম, ব্যক্তিগত অফিস, কনফারেন্স রুম—এটি দেখতে এক রাজপ্রাসাদের মতো। তবে এটি কোনো রাজপ্রাসাদ নয়, এটি একটি উড়োজাহাজ। কাতারের রাজপরিবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উপহার হিসেবে একটি অত্যন্ত বিলাসবহুল উড়োজাহাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে এটি "উড়ন্ত প্রাসাদ" নামে পরিচিতি পেয়েছে। ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের মধ্যেই এই উড়োজাহাজটি নিয়ে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে।
বোইং ৭৪৭-৮ মডেলের এই উড়োজাহাজটির মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪,৮৮০ কোটি টাকা। কাতারের সরকারের পক্ষ থেকে এই উপহারটি দেওয়া হচ্ছে এবং এটি মার্কিন সরকারকে বিদেশী কোনো রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া সবচেয়ে দামি উপহার হতে যাচ্ছে।
এই উড়োজাহাজে রয়েছে মাস্টার বেডরুম, অতিথি কক্ষ, শাহর সহ দুটি সম্পূর্ণ বাথরুম, নয়টি ছোট টয়লেট, পাঁচটি রান্নাঘর এবং একটি ব্যক্তিগত অফিস। সম্পূর্ণ সুসজ্জিত এই উড়োজাহাজটি মূলত কাতারের রাজপরিবার এবং উর্ধতন কর্মকর্তাদের পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত হতো।
উড়োজাহাজের অভ্যন্তরে রয়েছে বিশাল সোফা ও রিকলাইনার, কাঠের প্যানেলিং এবং ৪০ টিরও বেশি টেলিভিশন। এতে প্রায় ৯০ জন যাত্রী এবং ১৪ জন ক্রু সদস্য আরামদায়কভাবে ভ্রমণ করতে পারেন। সাধারণত, বোইং ৭৪৭-৮ মডেলের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে ৪৬০ জন যাত্রী বসতে পারেন, তবে এই উড়োজাহাজে স্ট্যান্ডার্ড বিজনেস ক্লাস আসন রয়েছে মাত্র পাঁচটি। বাকি জায়গাগুলোতে রয়েছে পাঁচটি লাউঞ্জ, যা দুই ডেক জুড়ে বিস্তৃত। দুই ডেকের মাঝে বিলাসবহুল সিঁড়ি দিয়ে সংযোগ রয়েছে।
এই উড়োজাহাজে আধুনিক প্রযুক্তি রয়েছে, যেমন লাইভ টিভি, রেডিও, ১৩টি ব্লু রে প্লেয়ার এবং ইন্টারনেট সংযোগ। উড়োজাহাজের অভ্যন্তরীণ সজ্জা অত্যন্ত বিলাসবহুল, যেখানে প্রতিটি কক্ষে রয়েছে নরম কার্পেট, চামড়ার সোফা এবং সোনালী ফিনিশিং। কনফারেন্স রুমে রয়েছে আরামদায়ক ট্যান ও ক্রিম রঙের চেয়ার, যেগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সামঞ্জস্য করা যায়।
এছাড়াও, বিমানের করিডরের দেয়ালগুলোতে রয়েছে প্রতিফলিত সোনালী রঙের শেড, যা অনেকটা নিউইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারের সজ্জার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই উড়োজাহাজটি এখন কাতার থেকে আমেরিকায় পাঠানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। পরে এটি প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ভ্রমণের জন্য ব্যবহৃত এয়ারফোর্স ওয়ান-এর পদমর্যাদায় উন্নীত করা হবে, এবং এতে আরও কিছু আপগ্রেড যেমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অন্যান্য প্রযুক্তি ইনস্টল করা হবে।
এই উপহারের উড়োজাহাজ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্পের প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে এই উড়োজাহাজটি সংরক্ষণাগারে স্থানান্তর করা হবে।
মারিয়া
