ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অবহেলা নয়, রুখে দাঁড়ান স্ক্যাবিসের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত: ০১:৫৬, ১৭ মে ২০২৫

অবহেলা নয়, রুখে দাঁড়ান স্ক্যাবিসের বিরুদ্ধে

ছবি: সংগৃহীত

স্ক্যাবিস, আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ চুলকানি মনে হলেও, আসলে এটি স্ক্যাবি মাইট নামক ক্ষুদ্র পরজীবীর সৃষ্ট ছোঁয়াচে চর্মরোগ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হন, এবং বাংলাদেশেও এর প্রকোপ বাড়ছে, বিশেষত গ্রীষ্মকালে কুমিল্লা ও রাজশাহী অঞ্চলে এর বিস্তার বেশ উদ্বেগজনক। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেমন মাদ্রাসা, হোস্টেল বা রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে এই রোগের ঝুঁকি বেশি থাকে।

স্ক্যাবিসের প্রাথমিক লক্ষণগুলো চেনা জরুরি। সংক্রমণের প্রায় ১৫ দিন পর অসহ্য চুলকানি শুরু হয়, যা সাধারণত আঙুলের ফাঁকে, নরম ত্বকে এবং ছোট ছোট পানির দানার মতো ফুসকুড়ির মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে। নারীদের স্তনের চারপাশে এবং শিশুদের যৌনাঙ্গেও এই সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। রাতে চুলকানির তীব্রতা বাড়ে, যা অনেক সময় একজিমা বা অ্যালার্জির সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়, ফলে ভুল চিকিৎসার শিকার হতে হয়।

মনে রাখা জরুরি, ফার্মেসির পরামর্শে স্টেরয়েড জাতীয় মলম ব্যবহার স্ক্যাবিসের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি সংক্রমণকে আরও গভীরে নিয়ে গিয়ে 'নডিউলার স্ক্যাবিস'-এর মতো জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে, যা শিশুদের জন্য বিশেষভাবে বিপজ্জনক।

স্ক্যাবিস প্রতিরোধে সচেতনতাই প্রধান হাতিয়ার। তাই, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো মলম বা ওষুধ ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি পরিবারের কোনো সদস্য আক্রান্ত হন, তবে সংক্রমণ এড়াতে পরিবারের সকল সদস্যকে একযোগে চিকিৎসা নিতে হবে। ব্যবহৃত পোশাক, বিছানার চাদর ও তোয়ালে গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকানো অথবা গরম ইস্ত্রি ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি, নখ ছোট রাখা এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা অপরিহার্য।

চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, স্ক্যাবিস এখন আর কেবল একটি সাধারণ রোগ নয়, এটি একটি জনস্বাস্থ্য বিষয়ক উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই, ত্বকের যেকোনো অস্বাভাবিকতা বা চুলকানি দেখা দিলে কালক্ষেপণ না করে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। আসুন, আমরা নিজেরা সচেতন হই এবং পরিবারকে সচেতন করি। সতর্কতা অবলম্বন করলে স্ক্যাবিসের বিস্তার রোধ করা অবশ্যই সম্ভব।

সাব্বির

×