
ছবিঃ ফ্রীপিক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদিন নতুন নতুন ডায়েট টিপস ভাইরাল হয়। সেলিব্রেটিদের ডায়েট প্ল্যান থেকে শুরু করে ওজন কমানোর নানা উপায় - সবই পাওয়া যায় এক স্ক্রোল দূরে। কিন্তু এসবের কতটা সত্য? বিশেষ করে নারীদের জন্য, যারা গর্ভাবস্থা, হরমোনাল পরিবর্তন বা ওজন ব্যবস্থাপনার মতো বিশেষ জীবনপর্ব পার করছেন, তাদের জন্য সঠিক পুষ্টি তথ্য জানা খুবই জরুরি।
পুষ্টিবিদ পারীক্ষা রাও, যিনি 'দ্য গুড বাগ'-এর স্বাস্থ্য কোচ, তিনি নারীদের মধ্যে প্রচলিত ১৬টি সাধারণ ডায়েট মিথ ভেঙে দিয়েছেন এবং বলেছেন, আসলে কীভাবে সুস্থ থাকা যায়।
প্রধান মিথ ও সত্য:
সকালের নাস্তা বাদ দিলে ওজন কমে: সকালের নাস্তা বাদ দিলে বরং রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যায়, ক্ষুধা বেড়ে যায় এবং বিপাকক্রিয়া ব্যাহত হয়। ফাইবার ও প্রোটিন সমৃদ্ধ নাস্তা অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াকে পুষ্ট করে, হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং সারাদিন ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
কৃত্রিম মিষ্টি চিনির চেয়ে ভালো: অনেক কৃত্রিম মিষ্টি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য নষ্ট করে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমায়। স্টিভিয়া, গুড় (পরিমিত পরিমাণে) বা খেজুরের মতো প্রাকৃতিক বিকল্প বেছে নিন।
ডায়েটে ঘি একদম খাওয়া যাবে না: ঘি মনের মতো ব্যবহার করলে এটি অন্ত্রের আস্তরণকে পুষ্ট করে এবং ফ্যাট-সলিউবল ভিটামিন (এ, ডি, ই, কে) শোষণে সাহায্য করে। এতে বুটাইরেট নামক একটি শর্ট-চেইন ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা কোলন কোষগুলিকে শক্তি দেয় এবং অন্ত্রের প্রদাহ কমায়।
বেশি ফাইবার খাওয়া সবসময় ভালো: ফাইবার অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য, কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবার, বিশেষত প্রক্রিয়াজাত ফাইবার সাপ্লিমেন্ট থেকে, কিছু মানুষের পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। ধীরে ধীরে ফাইবার গ্রহণ বাড়ানো এবং বিভিন্ন উৎস থেকে ফাইবার পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বিপাকের জন্য সব ক্যালরি সমান: আপনি যে ধরনের খাবার খান তা বিপাককে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট কম্পোজিশন (প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট) এবং মাইক্রোবায়োমের বৈচিত্র্য প্রভাবিত করে যে আপনার শরীর কীভাবে ক্যালরি প্রক্রিয়া করে।
গর্ভাবস্থার পুষ্টি: "গর্ভবতী মায়েরা দুজনের জন্য খাবেন" - এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। বাস্তবে, গর্ভাবস্থায় শুধু ৩০০-৫০০ অতিরিক্ত ক্যালরি প্রয়োজন হয়। পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি, কিন্তু পরিমাণে নয়।
চাল সম্পর্কে সত্য: চাল প্রায়ই ওজন বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়, কিন্তু এটি আসলে শত্রু নয়। অতিরিক্ত খাওয়া এবং ফাইবার জোড়া দেওয়ার অভাবই আসল সমস্যা।
পুষ্টি একটি ব্যক্তিগত বিষয়। প্রত্যেকের শরীরের চাহিদা আলাদা। তাই কোনো ডায়েট শুরু করার আগে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, সুস্থ থাকাই হলো সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য।
সতর্কতা: এই তথ্য শুধুমাত্র শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে প্রদান করা হয়েছে। কোনো প্রকার চিকিৎসা বা ডায়েট শুরু করার আগে সর্বদা আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
সূত্র: দ্য হিন্দুস্তান টাইমস
সাব্বির