
জনপ্রিয় নাট্যনির্মাতা ও সমাজ-রাজনীতি সচেতন ব্যক্তিত্ব মাবরুর রশিদ বান্না এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং ইতিহাসের নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই প্রথম আয়নাঘরে নির্যাতনের শিকার হন।
সাক্ষাৎকারে বান্না বলেন, “আওয়ামী লীগ হচ্ছে ভারতের একটা প্রজেক্ট, এই দেশকে কন্ট্রোল করার জন্য। অনেকেই বলেন বাধ্য হয়ে করেছেন, কিন্তু আমি বলি, যদি মন থেকে অন্যায়কে সাপোর্ট না করার মানসিকতা থাকে, তবে প্রতিরোধ করা সম্ভব।”
জুলাই অভ্যুত্থানের পর দেশে বাকস্বাধীনতার চর্চা বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “মানুষ এখন ভয় না পেয়ে কথা বলছে। বিটিভির মত সরকারি টেলিভিশনেও সরকারবিরোধী সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক পরিবর্তন।”
তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, “১৬-১৭ বছর মানুষ ফিসফিস করে কথা বলতো, দেয়ালের কান নিয়ে ভীত থাকত। অথচ তখন হাজারো গুম, খুন, ধর্ষণ, ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।”
বান্না বলেন, “আমরা এমন সময় দেখেছি, যখন একজন নারী শুধুমাত্র বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কারণে গ্যাং রেপের শিকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগের পাণ্ডারা এমন কাজ করেছে। এখন হয়তো রেপ বন্ধ হয়নি, কিন্তু এখন হলে সেটার আওয়াজ হয়, কারণ সরকারই সেই জায়গাটা তৈরি করেছে।”
তিনি বলেন, “গুমের ঘটনা বন্ধ হয়নি, কিন্তু গত এক বছরে আমরা গুমের খবর শুনিনি। এতদিন যে পরিবারগুলো তাদের স্বজন হারিয়েছিল, সেই সন্তানরাও বড় হয়ে গেছে, কিন্তু বাবার মুখ চিনতে পারেনি।”
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “মানুষ আশা করেছিল উপদেষ্টারা বিপ্লবী মনোভাব নিয়ে আসবেন। কিন্তু তারা দায়িত্ব নিলেও, দায়িত্ব পালনে সেই স্পিরিট দেখা যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আপনারা যারা গদিতে বসেছেন, সেটা তো রক্তমাখা গদি। আপনারা সেটা ফিল করেন না বলেই মানুষের মধ্যে অপ্রাপ্তির বোধ তৈরি হচ্ছে।”
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনি যদি দায়িত্ব নিয়ে থাকেন, তাহলে শুধু রাজনৈতিক দলের ওপর দোষ চাপিয়ে দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। কাজ করতে না পারলে কেন দায়িত্ব নিয়েছেন?”
মাবরুর রশিদ বান্না একজন সংস্কৃতিসেবী হলেও তার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ বাস্তবতার নানা দিক উন্মোচন করেছে। তার স্পষ্টভাষী ও সাহসী উপস্থাপন নতুন আলোচনার দ্বার খুলে দিয়েছে।
সূত্র:https://tinyurl.com/c4eh6epz
আফরোজা