ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২

ছাত্রলীগ কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি, ছাত্রদল নেতা ফরহাদের কল রেকর্ড ভাইরাল

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:৪৯, ২১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২২:৪৯, ২১ জুলাই ২০২৫

ছাত্রলীগ কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবি, ছাত্রদল নেতা ফরহাদের কল রেকর্ড ভাইরাল

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) এক সেকশন অফিসারের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের এক নেতার চাঁদা চাওয়ার একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

সোমবার (২১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গ্রুপে ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি অডিও ক্লিপ ছড়িয়ে পড়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অডিওতে চাঁদা দাবি করতে শোনা যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব ফরহাদ ইসলামকে এবং যার কাছ থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে, তিনি হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকশন অফিসার ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহ আলম।

অডিও ক্লিপে ফরহাদ ইসলামকে বলতে শোনা যায়, “এখন লিয়ন ভাই আমাকে গালাগালি করতেছে। না না ভাইয়ের সঙ্গে কোনো কথা না, ভাই এখন আমার কোনো কথাই শুনতেছে না বুঝছিস। তুই আমাকে দে, তুই কথা বল। আবেহ, আমার কথা শোন। আমি বাঁশেরহাটেই আছি। তুই ওই টাকাটার ব্যবস্থা করতে পারবি? তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে এখন ৫ হাজার টাকা দিতে পারবি?”

জবাবে শাহ আলম একদিন পর টাকা দিতে চাইলে ফরহাদ বলেন, “তুই এখনই দিবি। আজকে তোকে শেষ কথা বলে দিলাম, তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে টাকাটা পাঠাইয়া দিস। আমার ছোট ভাই সামনে দাঁড়ায় আছে তোকে নেওয়ার জন্য। তোকে আমি সারাদিন ধরি বেড়াইলাম, আমার কি কোনো দায়ভার নাই? তুই বলে বলিস, এই করবি সেই করবি। কাল সকালে তুই কাউকে দিছিস তো, এখন ব্যবস্থা কর। এখন আমি কি লিয়ন ভাইয়ের কথা শুনতে পারবো? বালের কথা বলতেছিস!”

শাহ আলম তাকে দেখা করতে বললে ফরহাদ বলেন, “দেখা করবো, তুই লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে আগে টাকা দে। বললাম তো ভাই, তুই টাকাটা আগে লিয়ন ভাইয়ের নাম্বারে ঢুকা, তারপর লাগলে আমার কাছে আসিস। যেভাবে ছাত্রলীগ করছিলি, সেভাবেই টাকা দিবি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব ফরহাদ ইসলাম বলেন, “শাহ আলম আগে ছাত্রলীগ করতো। ও আমার ব্যাচমেট, কিন্তু আমি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ওর জুনিয়র হয়ে গেছি। আমি জিয়া হলে উঠতে গেলে শাহ আলম বলে, ‘বন্ধু এমনি উঠা যায় না।’ এই বলে আমার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা ধার নেয়।”

সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “রেকর্ডে তো কোনো পাওনার কথা নেই, সেখানে তো আপনি লিয়ন ভাইয়ের নাম করে টাকা চাইছেন।” জবাবে ফরহাদ বলেন, “লিয়ন ভাইয়ের সাথে আমার তেমন সম্পর্ক নেই, চিনিও না। শুনেছি উনি শাহ আলমের খুব ঘনিষ্ঠ। তাই টাকা উদ্ধারের জন্য তার মাধ্যমেই চেয়েছিলাম। আর শুনেছি, লিয়ন ভাই ২০১০-১১ সালে ছাত্রদলে ছিলেন, এখন নাকি তাঁতী লীগ করেন—এইটা আমি জানতাম না।”

তিনি আরও বলেন, “রেকর্ডটা প্রায় এক বছর আগের। আমাদের ছাত্রদলের যারা বিতর্কিত, তারাই আমার ইমেজ নষ্ট করতে এটা ভাইরাল করেছে। আমার ভাবমূর্তি পরিষ্কার বলেই তারা এমন করেছে। শাহ আলমও তো কোনো অভিযোগ করেনি। তার বক্তব্য আমার কাছেও আছে—সে বলেছে এটা চাঁদাবাজি না।”

ভুক্তভোগী সেকশন অফিসার শাহ আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সব মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া গেছে। অফিসে খোঁজ নিলে জানা যায়, তিনি সাময়িক অব্যাহতিতে আছেন।

সানজানা

×