বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল প্রথাগত পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান
বিশ্ববিদ্যালয়ে কেবল প্রথাগত পাঠ্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান না করে, সেমিনার কিংবা কনফারেন্সের মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞানের ক্ষেত্রও তৈরি করে। এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পার্থক্য থাকে না । বিশ্ববিদ্যালয় হবে এমন- পড়াশোনার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের বিপ্লবী হতে অনুপ্রাণিত করবে, লেখক তৈরির চারণভূমিতে পরিণত হবে এবং সমাজ, ধর্ম, রাষ্ট্র, দর্শন, অর্থনীতি, রাজনীতি, শিল্প ও সাহিত্য এবং সংস্কৃতি নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনার জন্ম দেবে।
‘উপনিবেশ উত্তর ইতিহাস, ভাষা ও সাহিত্য’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের মাধ্যমে জ্ঞানগর্ভ আলোচনার আয়োজন করেছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়। দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এবং ভারতের লেখক ও প্রখ্যাত গবেষকবৃন্দ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের ২৫-৩০ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বেরোবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
২৯ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের প্রথমদিনে সকালে বেরোবি ক্যাফেটেরিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ভারতের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য লেখক-গবেষক অধ্যাপক ড. পবিত্র সরকার। এ সময় তিনি বলেন, ভাষার সঙ্গে সাহিত্য-সংস্কৃতির একটা গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। ভাষা ও সংস্কৃতির মাধ্যমে উপনিবেশ পরবর্তী সময়ে এ অঞ্চলের সমাজ অনেকখানি বদলে গেছে। এর পেছনে সমাজের বুদ্ধিজীবী শ্রেণির বলিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ তার বক্তৃতায় বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কলা অনুষদ কর্তৃক প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে গবেষক, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন। পাশাপাশি এ ধরনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি দেশের গ-ি ছাড়িয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা বলেন, দেশ ও বিদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও গবেষকদের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিক সম্মেলন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে সমৃদ্ধ করবে। আগামীতে এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বেরোবি কলা অনুষদ কর্তৃক আয়োজিত ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর দুই দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রথমদিন পাঁচটি সেশন অনুষ্ঠিত হয়। পর্যায়ক্রমে ৫টি পৃথক সেশনে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষকবৃন্দ তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সম্মেলনের প্রথমদিনে পঠিত হয় ১৬টি প্রবন্ধ। চারটি আলাদা স্বতন্ত্র আলোচনা। উপনিবেশ উত্তর ইতিহাস, ভাষা ও সাহিত্য শীর্ষক’ আন্তর্জতিক কনফারেন্সে প্রায় ৪২টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়।
বাংলাদেশ ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীগণ প্রবন্ধগুলো উপস্থাপন করেন। সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত বেরোবি ক্যাফেটেরিয়ায় সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তী বাকি অংশ অ্যাকাডেমিক ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে খাবার, বই, কলম ও ব্যাগ দেওয়া হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন বেরোবি কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান তুহিন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আসিফ আল মতিন।