ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

‘মিড ডে মিল’ কর্মসূচি নিয়ে জটিলতা

অপেক্ষা বাড়ল ৩১ লাখ শিক্ষার্থীর

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৪, ৬ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০০:০৫, ৬ জুলাই ২০২৫

অপেক্ষা বাড়ল ৩১ লাখ শিক্ষার্থীর

তিন দফায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের আশ্বাস দিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি

দরপত্র জটিলতার কারণে আবারও পিছিয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মিড ডে মিল। তিন দফায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারের আশ্বাস দিয়েও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। নতুন করে আবারও আগামীতে এই মিড ডে মিল চালু করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো সঠিক দিনক্ষণ জানা যায়নি। এতে দেশের ৮ বিভাগের ১৫০ উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখেরও বেশি শিশু শিক্ষার্থীর অপেক্ষা বাড়ল।
এই প্রকল্পে মোট বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৪৫২ কোটি টাকার বেশি। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশ ব্যয়ই বরাদ্দ রাখা হয়েছে খাদ্য সরবরাহের জন্য। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ১৬৪ কোটি টাকার বেশি। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। 
অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে দেশের ৮ বিভাগের ৬২ জেলার ১৫০ উপজেলার ১৯ হাজার ৪১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী হবে। এ প্রকল্প চলবে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রকল্প সফল হলে সারাদেশের স্কুলগুলোয় মিড ডে মিল চালু করা হবে।
প্রকল্প সূত্র জানায়, আগামী সেপ্টেম্বরে চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। অক্টোবরে দরপত্র কার্যক্রম শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর পর শিক্ষার্থীদের হাতে খাবার পৌঁছানো সম্ভব হবে। এ বিষয়ে জানতে প্রকল্পর পরিচালক (পিডি) ও যুগ্ম সচিব হারুন অর রশীদের মোবাইলে কল দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি। 
গত জানুয়ারিতে শুরু হওয়া ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফিডিং কর্মসূচি’ বা মিড ডে মিল প্রকল্পটির আওতায় স্কুল চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সপ্তাহে পাঁচ দিন পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করার কথা বলা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বনরুটি, সিদ্ধ ডিম, ইউএইচটি দুধ, ফরটিফায়েড বিস্কুট এবং মৌসুমি ফল বা কলা। সপ্তাহের রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের পরিবেশন করা হবে বনরুটি ও সিদ্ধ ডিম। সোমবার বনরুটি ও দুধ এবং বুধবার মিলবে ফরটিফাইড বিস্কুট ও মৌসুমি ফল বা কলা। প্রতিটি বনরুটির ওজন নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০ গ্রাম, প্রতিটি ডিম ৬০ গ্রাম, দুধ ২০০ গ্রাম, বিস্কুট ৭৫ গ্রাম ও ফল ১০০ গ্রাম।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের খাদ্যতালিকা শিক্ষার্থীদের পুষ্টি নিশ্চিত করবে এবং ক্ষুধার তাড়না থেকে মুক্তি দিয়ে শ্রেণিকক্ষে মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এ ছাড়া প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার কমবে এবং বিদ্যালয়ে উপস্থিতির হার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে স্কুল ফিডিং মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকসহ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা। প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণও গুরুত্ব পাচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজন করা হবে ১৯২টি ব্যাচে ওরিয়েন্টেশন ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। অংশ নেবেন প্রায় ১৯ হাজার ৭১৯ শিক্ষক ও কর্মকর্তা।

প্যানেল হু

×