ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

৩৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে

জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স ১৯৫ কোটি ডলার

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:০৬, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স ১৯৫ কোটি ডলার

দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরেই

দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। সংকট কাটাতে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবুও সহসাই কাটছে না সংকট। তবে ডলার সংকটের মধ্যেই সুবাতাস বইছে প্রবাসী আয়ে। চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা হিসাবে) এ অর্থ ২০ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে এসেছে ৬ কোটি ৩১ লাখ ডলারের বেশি। এর আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছিল ১৬৯ কোটি ডলারের রেমিটেন্স। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, ডলার সংকট দূর করতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত থেকে প্রতিনিয়ত ডলার সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত জরুরি আমদানি দায় মেটাতেই এ ডলার সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। এরপরও আটকে আছে কোটি কোটি টাকার পণ্য। ডলার সংকটে আমদানিকারকদের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হচ্ছে দেশের অনেক ব্যাংক। এসব সমস্যা সমাধানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) রিজার্ভ থেকে ৮৫০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো পুরো অর্থবছরেও রিজার্ভ থেকে এত পরিমাণ ডলার বিক্রি হয়নি। 
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, জানুয়ারিতে ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে। আগের মাস ডিসেম্বরে এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার। সে হিসাবে গতমাসের চেয়ে জানুয়ারিতে ২৫ কোটি ৯১ লাখ ডলার বেশি রেমিটেন্স এসেছে। গতবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি এসেছে ২৫ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স এসেছিল ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার।
আলোচিত মাস জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স এসেছে বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এ ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩৫৪ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপরেই এসেছে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাধ্যমে ১২১ দশমিক শূন্য ৩ মিলিয়ন ডলার। এছাড়াও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১৭ দশমিক ১০ মিলিয়ন ডলার এবং সরকারি অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১০৪ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
তবে জানুয়ারি মাসে কোনো রেমিটেন্স আসেনি রাষ্ট্রায়ত্ত ডিবিবিএল, বিশেষায়িত রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের মাধ্যমে। এছাড়াও বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশী হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমেও কোনো রেমিটেন্স আসেনি। চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) টানা দুই বিলিয়ন ডলার করে রেমিটেন্স আসে। এরপরের মাস সেপ্টেম্বর থেকে টানা পাঁচ মাস দেড় বিলিয়ন ডলারের ঘরেই ছিল রেমিটেন্সের প্রবাহ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। এরপর আগস্টে আসে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। এরপরই কমতে থাকে রেমিটেন্স প্রবাহ, যা দেড় বিলিয়ন বা তার কাছাকাছি চলে আসে। এরপরের মাস সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৩ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার। অক্টোবরে আসে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে প্রায় ১৭০ কোটি ডলার বা ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিটেন্স আসে। এছাড়া সদ্য বিদায়ী জানুয়ারি মাসে রেমিটেন্স এলো ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার।

গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে দুই হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ (২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। এটি তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ১১ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ (২৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসীরা।

×