ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

২০২৪ সালে সাড়ে ১২ মিলিয়ন যাত্রীর রেকর্ড

শাহজালালে নবাগত ও বিদায়ী ইডি সংবর্ধিত

প্রকাশিত: ১৮:৫০, ১৪ মে ২০২৫; আপডেট: ১৮:৫৫, ১৪ মে ২০২৫

শাহজালালে নবাগত ও বিদায়ী ইডি সংবর্ধিত

ছবি: জনকণ্ঠ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগিব সামাদ বলেছেন, এয়ারপোর্ট আমাদের দেশের ইমেজকে ধারণ করে। আর এ ইমেজ বাড়াতে এয়ারপোর্টের মানোন্নয়ন জরুরি। সুতরাং এয়ারপোর্টের যে যাত্রীসেবা, আমরা সেটা আরো বাড়াবো। এটি বাস্তবায়নের জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। এ সময় বিদায়ী নির্বাহি পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন ড. কামরুল ইসলাম বলেন, এয়ারপোর্টের মতো কেপিআই সম্পর্কে নিউজ করতে হলে উভয়পক্ষের মধ্যে হৃদ্যতা ও সুসম্পর্ক থাকলে উভয়ের জন্যই মঙ্গলজনক।

তিনি জানান, বিদায়ী বছরে হজরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর দেশি-বিদেশি ১ কোটি ২৫ লাখ যাত্রী হ্যান্ডেল করেছে। এটা একটা রেকর্ড। বুধবার বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ভবনে এভিয়েশন অ্যান্ড ট্যুরিজম জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (এটিজেএফবি) আয়োজিত এক ফেয়ারওয়েল অনুষ্ঠানে বিদায়ী ও নবাগত নির্বাহি পরিচালকদ্বয় এ কথা বলেন। ফেয়ারওয়েলে সদ্য বিদায়ী নির্বাহী পরিচালক ও নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন নির্বাহী পরিচালককে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এটিজেএফবির সভাপতি তানজীম আনোয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংগঠনের নেতা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

রাগিব সামাদ বলেন, আমার যে নতুন যাত্রা শুরু হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে, যদি আপনাদের (সাংবাদিক) সহযোগিতা না পাই। কামরুল ইসলাম তার যে কর্মদক্ষতা রেখে গেছেন, সেটাকে প্রবাহমান রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যেকোনো কাজেই মানুষের ভূলভ্রাণি্ত হয়, আমিও তার উধের্ব নই। আপনাদের গঠনমূলক সমালোচনা সেসব ভুলভ্রান্তি ঠিক করতে সহযোগিতা করবে।

বক্তব্যে সাবেক নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম বলেন, গতবছর পর্যন্ত এয়ারপোর্ট ১২ মিলিয়নের বেশি যাত্রী বহন করেছে। এছাড়া রেমিট্যান্সও এসেছে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি। দ্রুততম সময়েই থার্ড টার্মিনাল অপারেশনে চলে আসবে। এটা সত্যিই কঠিন কাজ। ৮০ লাখের ধারণ ক্ষমতার এই আস্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। এটা যেমন চ্যালেঞ্জের তেমনই আনন্দের।

এ সময় ড. কামরুল ইসলাম তার দীর্ঘ তিন বছরের অভিজ্ঞতা থেকে এই বিমাবন্দরের মূল চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলেন, দিন দিনই বাড়ছে যাত্রীর সংখ্যা, সেই সঙ্গে বাড়ছে রাজস্বও। বিদায়ী বছরে আগের বছরের তুলনায় শতকরা ৭ ভাগ যাত্রী বেড়েছে। ২০২৪ সালে রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেও দেশি-বিদেশী গন্তব্যে ১ কোটি ২৫ লাখ যাত্রী হ্যান্ডেল করেছে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর। কিন্তু সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচেছ যাত্রীসেবা সার্বক্ষণিক নিশ্চিত করা।

এখানে প্রতিদিন আন্তজার্তিক, অভ্যন্তরীণ, দেশী বিদেশী এয়ারলাইন্স ও কার্গো ফ্রেইটসহ কমপক্ষে তিন শতাধিক ফ্লাইট অপারেট করা হয়। সীমিত জনবল ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও এতগুলো ফ্লাইটের সেবা নিশ্চিত করা আসলেই একটা কঠিন কাজ। তার মধ্যে আবার যে হারে যাত্রী বাড়ছে, সেটা যেমন সম্ভাবনার ততোটাই চ্যালেঞ্জের। মোট যাত্রীদের শতকরা ৬৩ ভাগই হচেছ-প্রবাসী কর্মী। তাদের বিমানবন্দরের প্রাপ্য সুবিধা ও অধিকার নিশ্চিত করাটাই চ্যালেঞ্জ। তাদের লাগেজ ঠিক মতো পাওয়া গেলো কিনা, লেফট বিহাইন্ড লাগেজ আবার ফিরিয়ে দেয়ার মতো দায়িত্বও পালন করতে হচেছ। বিমানকে সঙ্গে নিয়ে এ কাজটি করতে হচেছ। তবে আমি মনে করি এসব অভিযোগ দূর করা বিংবা সমস্যাগুলো নিরসনে ওয়ানস্টপ সার্ভিস বা ডেস্ক চালু করা গেলে আরও সুবিধা হতো।

কামরুল ইসলাম বিগত তিন বছরের এভিয়েশান ফোরামের সাংবাদিকদের আন্তরিক ও পেশাগত সহযোগিতার কথা স্মরণ করে বলেন, এ অবদান ভুলার নয়। এয়ারপোর্টের মতো কেপিআই সম্পর্কে নিউজ করতে হলে উভয়পক্ষের মধ্যে হৃদ্যতা ও সুসম্পর্ক থাকলে  উভয়ের জন্যই মঙ্গলজনক।

জানা গেছে, বিদায়ী নির্বাহি পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের বিগত তিন বছরে কর্মজীবনে হজরত শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি চোখে পড়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে-প্রবাসী লাউঞ্জ, ওয়েটিং লাউঞ্জ, হেল্প ডেস্ক, হজ ইউনিট,  লাগেজ ডেলিভারি, ওয়েব পোর্টাল চালু প্রশিক্ষণ প্রদান, পরিষ্কার ও বিশুদ্ধতা নিশ্চিতকরণ, বিএমইটি-তে প্রবাসীদের অবদানের স্বীকৃতি সংক্রাড় মডিউল চালু, গ্রিন চ্যানেল চালু, নতুন টেলিফোন, ইন্টারনেট, নতুন ট্রলি সংযোজন, হটলাইন চালু ডমেস্টিকে যাত্রীদের আসন সংযোজন, নির্দেশিকা প্রতিক, মশক নিধন পদ্ধতি, প্রবাসীদের শুল্ক পরিশোধের উপস্থিত দাঁ ড়িয়ে, আংশিক ই-গেট চালু, পাখি হঠানোর জরিপ, শাটল বাসা চালু নেওয়া। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে প্রবাসীদের জন্য চালু করা দুটো লাউঞ্জ। একটি ভেতরে. আরেকটি বাহিরে।

ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত বিনয়ী ও সদা স্মিতহ্যাসোজ্জ্বল কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের যথাসম্ভব সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে মিডিয়াবান্ধব হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন।

এসইউ

×