ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ৩১ চৈত্র ১৪৩২

আমতলীতে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা

প্রকাশিত: ২১:৪৯, ১৪ মে ২০২৫

আমতলীতে মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড়

এভাবেই পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে ময়লার বাগাড় করেছে

পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে আমতলীর উতশিতলা নামক এলাকায় খোলা স্থানে পৌরসভার ময়লা ফেলা হচ্ছে। পঁচা দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ দুষিত হচ্ছে। সড়কে চলাচলকারী মানুষ নাক চেপে যেতে হচ্ছে। দ্রুত এ ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ২৩ আগস্ট আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। গত ২৭ বছরে আমতলী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করতে পারেনি। ওই সময় থেকে  পৌরসভা কর্তৃপক্ষ শহরের বিভিন্ন স্থান ও নদীতে ময়লা ফেলে আসছে। এতে শহরের পরিবেশ চরম আকারে দূষিত হয়। গত তিন মাস ধরে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলীর উতশিতলা নামক স্থানে ময়লা ফেলা শুরু করে। এতে ওই ময়লা ফেলার স্থানটি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বাতাসের সঙ্গে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। মানুষ নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে। এ মহাসড়কে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। এছাড়া ওই ভাগাড়ের চারদিকে গ্রামাঞ্চল রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা ও যানবাহনে চলাচলকারী মানুষ দূষিত পরিবেশে জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, মহাসড়কের পাশে খোলা স্থানে ময়লা ফেলায় বসবাস করা খুবই কষ্টকর। এতে পরিবেশ দূষিত হয়ে নানাবিধ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। দ্রুত এ ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের পাশে ময়লায় একাকার হয়ে আছে। মানুষ নাক চেপে চলাচল করছে। দুর্গন্ধে গাড়ির জানালা ও দরজা বন্ধ রাখা হচ্ছে। গাড়ির যাত্রীরা নাক চেপে চলাচল করছে। এছাড়াও পৌর শহরের ওয়াবদা এলাকা ও টিএনটি রোড়ে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় লিটন গাজী ও রাসেল মৃধা বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় স্থাপন করায় আমরা খুবই কষ্টে আছি। ময়লার দুর্গন্ধে বাড়িতে বসবাস করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। দ্রুত এ ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বাসযাত্রী জিয়া উদ্দিন জুয়েল বলেন, প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হয়েও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নেই। যেখানে সেখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে এলাকার পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত সড়কের পাশ থেকে ময়লার ভাগাড় সরিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।
আমতলী পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম জাকির মৃধা বলেন,  ময়লার আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় ময়লা মহাসড়কের পাশে রাখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন দুর্গন্ধ রোধে ওই ময়লায় ব্লিসিং পাউডার দেওয়া হয়। আমতলী পৌর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ বলেন, ময়লা ফেললে দুর্গন্ধতো ছড়াবেই। আগে নদীতে ময়লা ফেলা হতো। এখন মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ময়লা ফেলার ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করতে হলে অন্তত ৮ থেকে ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন। ওই পরিমান টাকা পৌরসভায় বরাদ্দ নেই। ফলে ডাম্পিং স্টেশন করতে পারছি না। অর্থ সঙ্কুলান হলে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ডাম্পিং স্টেশন করা হবে।
পরিবেশকর্মী হাইরাজ মাঝি বলেন, পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে ময়লার ভাগাড় এটা অত্যন্ত খারাপ। ওই সড়কে প্রতিদিন কয়েক হাজার যানবাহনে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করে। সকল মানুষকেই পচা দুর্গন্ধ বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে বায়ুবাহিত রোগ জীবানু ছড়াতে পারে। তিনি আরও বলেন, ওই স্থানে মাছি বংশ বিস্তার করে। ফলে মানুষের শরীরে সংক্রমণ রোগ হতে পারে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসক রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, আগামীকাল পৌরসভায় সভার আয়োজন করা হয়েছে। ওই সভার আলোচনায় ময়লার ভাগাড় নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

প্যানেল

×