
ছবি: সংগৃহীত।
হৃদরোগ মানেই বুকে ব্যথা বা শ্বাসকষ্ট—আমাদের ধারণা এটাই। কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, এমন একটি লক্ষণ রয়েছে যা শরীরের একদম নিচের অংশে, অর্থাৎ পায়ে দেখা দিতে পারে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, ৪৬% মানুষ এই লক্ষণটি সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞ। ফলে অনেক সময়ই গুরুত্বহীন ভেবে এই সংকেতটিকে অবহেলা করা হয়, যার পরিণতি হতে পারে মারাত্মক।
যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বনামধন্য হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণায় দেখা গেছে, বহু মানুষ হৃদরোগের একটি নির্দিষ্ট লক্ষণ—Peripheral Artery Disease (PAD) বা পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজ—সম্পর্কে জানেন না। PAD হলো এমন এক অবস্থা যেখানে পায়ের রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যায়, ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এর প্রধান কারণ অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস বা রক্তনালীর মধ্যে চর্বির স্তর জমা হওয়া, যা একইভাবে হৃদরোগেরও মূল উৎস।
লক্ষণগুলো কী?
PAD-এর অন্যতম লক্ষণ হলো—
- হাঁটার সময় পায়ে ব্যথা বা খিঁচুনি
- পায়ের পেশিতে দুর্বলতা
- পা ঠান্ডা অনুভব করা, বিশেষত এক পায়ে
- পায়ের রঙ ফ্যাকাশে বা নীলচে হয়ে যাওয়া
- পায়ের ক্ষত সহজে না শুকানো
এই উপসর্গগুলো বিশেষ করে হাঁটার সময় দেখা দিলেও বিশ্রামে আরাম পাওয়া যায়। কিন্তু সেটিও হৃদযন্ত্রের বিপদের ইঙ্গিত হতে পারে।
হৃদযন্ত্রে কীভাবে প্রভাব ফেলে?
PAD মানেই শুধু পায়ের রক্তপ্রবাহে সমস্যা নয়—এটি ইঙ্গিত করে যে শরীরের অন্যান্য অংশ, বিশেষ করে হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কের রক্তনালীতেও একই ধরনের সমস্যা হতে পারে। ফলে PAD থাকলে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও বহুগুণ বেড়ে যায়।
কে বেশি ঝুঁকিতে?
- ৫০ বছরের বেশি বয়সীরা
- ডায়াবেটিক রোগীরা
- উচ্চ রক্তচাপে ভোগা মানুষ
- ধূমপানকারীরা
- যারা খুব কম শারীরিক পরিশ্রম করেন
সমাধান কী?
প্রথমত, যেকোনো ধরনের অস্বাভাবিক পায়ের ব্যথা বা অস্বস্তি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। পাশাপাশি নিয়মিত হাঁটা, স্বাস্থ্যকর খাবার, ধূমপান পরিহার ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও PAD প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ।
যেখানে হৃদরোগের লক্ষণ নিয়ে সচেতনতা বাড়ছে, সেখানে পায়ের অজানা সংকেতগুলোকেও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কারণ শরীর সবসময় সংকেত দেয়—আমাদের দরকার শুধু তা বুঝে নেওয়া।
চোখ রাখুন নিজের শরীরের প্রতি, সচেতন থাকুন হৃদয় নিয়ে।
নুসরাত