ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৫ মে ২০২৫, ৩১ চৈত্র ১৪৩২

রাজশাহীর পাকা আমের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে আজ

মামুুন-অর-রশিদ, রাজশাহী

প্রকাশিত: ০০:২৫, ১৫ মে ২০২৫

রাজশাহীর পাকা আমের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে আজ

.

রাজশাহীর সুমিষ্ট আমের জন্য অপেক্ষার প্রহর শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। জেলা প্রশাসনের ম্যাঙ্গোপঞ্জি অনুযায়ী আজ চলতি মৌসুমের গুটিজাতের পাকা আম বাজারে মিলবে।
এবার, রাজশাহীতে এক হাজার ছয়শ’ পঁচানব্বই কোটি পঁচাশি লাখ টাকার বেশি আমের বাণিজ্য আশা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রাজশাহীর আমচাষি ও বাগানীরা গাছে গাছে গুটি জাতের আম পাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। ব্যবসায়ীরাও হাঁকডাক শুরু করবেন আজ থেকে।
রাজশাহীর আমচাষিরা বলছেন, কদিন ধরেই গাছে গাছে গুটি জাতের আমে পাক ধরেছে। তবে প্রশাসনের নির্দেশনার কারণে আম পাড়া সম্ভব হয়নি। যদিও অনেকে এরই মধ্যে বাজারে তুলেছেন গুটিজাতের পাকা আম। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের ঘোষিত ম্যাঙ্গোপঞ্জি অনুযায়ী আজ বাজারে পাওয়া যাবে গুটিজাতের আম। আজ থেকেই বাজারজাত করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। এ মাসেই জাত আমগুলো বাজারে মিলবে একের পর এক ধারাবাহিকভাবে। সে অনুযায়ী জনপ্রিয় গোপালভোগ আম মিলবে আগামী ২২ মে। এর ঠিক দুদিন পর বাজার রাঙাতে আসবে রানীপছন্দ ও লক্ষ্মণভোগ। আর মাসের শেষ দিনে অর্থাৎ ৩০ মে থেকে বাজারে সুবাস ছড়াবে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি।
এছাড়া পর্যায়ক্রমে ১০ জুন থেকে ব্যানানা ম্যাঙ্গো ও ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে বারি আম-৪, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা, ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়া কাটিমন ও বারি আম-১১ সারাবছরই পাকা সাপেক্ষে পাড়া যাবে। সবমিলিয়ে আজ থেকে আগামী তিন মাসজুড়ে রাজশাহীতে কারবার চলবে আমের।
খুচরা থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ইতোমধ্যে তাদের প্রস্তুতি নিয়েছেন। দেশের কুরিয়ার সার্ভিসগুলোর পাশাপাশি অনলাইনে আম ডেলিভারির কাজেও নামছেন উদ্যোক্তরা। পাইকাররাও রাজশাহীতে আসতে শুরু করেছে এরই মধ্যে। ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, এবার তারা আমের ভালো বাণিজ্য করবেন। আর আমবাগানীরা ভালো ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার আমের বাম্পার ফলন হবে রাজশাহীতে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় এবার ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা বলেন, ম্যাঙ্গোপঞ্জি অনুযায়ী এবার বাজারে পরিপক্ব আম মিলবে।
রাজশাহী জেলায় সবচেয়ে বেশি আম চাষ হয় বাঘা ও চারঘাট উপজেলায়। জেলায় মোট উৎপাদিত আমের অর্ধেক আম চাষ হয় এই দুই উপজেলায়।
বুধবার রাজশাহীর বিভিন্ন বাগানে ঘুরে দেখা গেছে, পাকা আম ঝুলছে গাছে গাছে। নিচে পাহারা বসিয়েছেন বাগান মালিকরা। তারা বলছেন, গুটিজাতের সব আম পেকে খাওয়ার উপযোগী হয়ে গেছে। সামান্য বাতাসে পাকা আম খসে পড়তেও দেখা গেছে।
রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাসুদল হক রিংকু বলেন, রাজশাহীর আমের একটি সুখ্যাতি রয়েছে। আমের মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলের গ্রামীণ অর্থনীতি থাকে চাঙ্গা। আম কেন্দ্রিক বাণিজ্যে সচল থাকেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এবারও আমের ভালো ফলন আশা করা হচ্ছে। পরিবহন ব্যবস্থা এবার ঠিকঠাক রয়েছে। এ কারণে এবার রাজশাহীর আমকেন্দ্রিক বাণিজ্য ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।    
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, মানুষ যাতে জীবাণুমুক্ত, ফ্রেশ আম পায়, সেই জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হয়েছে এবার। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, রাজশাহীতে এবার এক হাজার ছয়শ’ পঁচানব্বই কোটি পঁচাশি লাখ টাকার বেশি আমের কেনাবেচা হবে।

 

প্যানেল

×