ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২

প্রযুক্তির চাকচিক্য ছাপিয়ে স্বাস্থ্যসেবার মানবিকতা

কেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণরা এখন টেক কোম্পানি ছেড়ে চাকরি চান হাসপাতালে?

প্রকাশিত: ১৩:৩৫, ১৪ মে ২০২৫

কেন যুক্তরাষ্ট্রের তরুণরা এখন টেক কোম্পানি ছেড়ে চাকরি চান হাসপাতালে?

ছবি: সংগৃহীত।

এক দশক আগেও তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের স্বপ্নের গন্তব্য ছিল গুগল, ফেসবুক বা অ্যাপলের মতো টেক জায়ান্টগুলো। স্টক অপশন, ফ্রি লাঞ্চ, আধুনিক অফিস আর হাই-টেক পরিবেশ—সবই ছিল আকর্ষণের মূল কারণ। কিন্তু সময় বদলেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে নতুন গ্র্যাজুয়েটদের প্রায় ৭৫ শতাংশ এখন বেছে নিচ্ছেন হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা খাতকে, টেকনোলজি কোম্পানির চাকরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা।

মানবিক পেশার প্রতি ঝোঁক বাড়ছে:
এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একাধিক কারণ। কোভিড-১৯ মহামারি অনেক তরুণের মননে গভীরভাবে প্রভাব ফেলেছে। তারা এখন এমন কাজ খুঁজছেন, যেখানে সরাসরি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলা যায়। স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে যুক্ত হওয়া মানেই যেন সমাজে একটি ‘পার্পাসফুল’ ভূমিকা পালন করা।

টেক জায়ান্টদের প্রতি আগ্রহ কমছে কেন?
টেক কোম্পানিগুলোতে সম্প্রতি চাকরি সংকোচন, কর্মপরিবেশে চাপ এবং অস্থিরতার কারণে অনেক তরুণই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এর পাশাপাশি রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ও অটোমেশনের প্রভাব, যা অনেককে ভাবিয়ে তুলেছে—এই খাতে দীর্ঘমেয়াদে স্থায়িত্ব কতটা থাকবে?

হাসপাতাল মানে শুধু ডাক্তারি নয়:
এই তরুণরা শুধুমাত্র ডাক্তার বা নার্স হতেই চাইছেন না। অনেকে অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ডেটা অ্যানালাইসিস, পাবলিক হেলথ, মেডিকেল টেকনোলজি বা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সংক্রান্ত বিভাগেও আগ্রহ দেখাচ্ছেন। হেলথকেয়ার ইন্ডাস্ট্রির বিস্তৃতি ও চাকরির স্থায়িত্ব তাদের এই সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রাখছে।

সামাজিক স্বীকৃতি ও মানসিক সন্তুষ্টি:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাস্থ্যসেবা পেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা দীর্ঘমেয়াদে মানসিকভাবে বেশি সন্তুষ্ট থাকেন। সামাজিকভাবে এদের সম্মানও বেশি। তরুণরা এখন ক্যারিয়ারকে দেখছেন শুধু অর্থ আয়ের মাধ্যম হিসেবে নয়, বরং জীবনের অর্থ খুঁজে পাওয়ার একটি পথ হিসেবে।


এই ট্রেন্ড একদিকে যেমন স্বাস্থ্যসেবা খাতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করছে, তেমনি টেক ইন্ডাস্ট্রিকে ভাবিয়ে তুলছে—কেন তারা তরুণ প্রতিভা ধরে রাখতে পারছে না। হয়তো ভবিষ্যতের কর্পোরেট সংস্কৃতি গঠনে এই পরিবর্তন এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে চলেছে।

নুসরাত

×