ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২

যুদ্ধ ও মিথ্যা

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:২২, ১০ মে ২০২৫

যুদ্ধ ও মিথ্যা

ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে ভারতীয় গণমাধ্যম অনুসরণ করতে যে ধরনের বিশ্বাস-স্থাপনের প্রয়োজন, তা যেন একপ্রকার চরম ক্রীড়া। দর্শকরা সম্ভবত প্রতিবার এমন কিছু দেখার পর এক কাপ চা খেয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে পড়েন। শুধু বাস্তবতায় ফিরে আসার জন্যই।

উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অভিযানের বিষয়ে বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলের ‘প্রাণবন্ত’ প্রচার বিবেচনা করুন। বৃহস্পতিবার রাতের সম্প্রচারে এক চ্যানেল দাবি করে বসে যে ইসলামাবাদ পতন হয়েছে, আরেকটি জানায় যে পেশাওয়ার বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে; কেউ বলছে লাহোর ভারতীয় ট্যাঙ্কের নিশানায়, আবার কেউ বলছে করাচি বন্দরে আগুন লেগেছে।

কেউ একজন প্রতিশ্রুতি দেয় যে একটি এফ-১৬ বিমান ভূপাতিত হয়েছে, আবার কেউ বলে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আত্মসমর্পণ করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে হাস্যকর ছিল টাইমস নাও-এর সরাসরি সম্প্রচারে ‘বিশেষজ্ঞদের’ একঝাঁক, যারা উত্তেজনার সঙ্গে ঘোষণা করছিলেন যে পাকিস্তানে স্থল অভিযানের সূচনা হয়েছে।

যুদ্ধের প্রথম বলি সত্য, তবে এভাবে শিল্পগত মাত্রায় সত্যের হত্যা দেখা এখনও আতঙ্কজনক। যুদ্ধের কুয়াশা সত্যকে আড়াল করতে পারে, সেটি বোধগম্য কিন্তু সংবাদমাধ্যম যখন সেই কুয়াশা দূর করার বদলে তা আরও ঘনীভূত করে, তখন সেটি ক্ষমার অযোগ্য।

যদিও, এই সীমান্তের এ পাশের মিডিয়াও পুরোপুরি দোষমুক্ত নয়। কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল এবং তাতে অংশ নেওয়া তথাকথিত বিশেষজ্ঞরাও দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করেছেন। তাদের উচিত অপপ্রচার ও যাচাইবিহীন তথ্য থেকে বিরত থেকে আরও বাস্তবভিত্তিক সংবাদ পরিবেশনের দিকে মনোযোগী হওয়া।

তবে অন্তত পাকিস্তানি গণমাধ্যম দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে তা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা হয়। অনেকেই খোলাখুলি বলেন যে তারা দেশীয় মিডিয়ার উপর আস্থা রাখেন না এবং নিরপেক্ষ বা বিদেশি সূত্রের প্রতিবেদনের উপর বেশি নির্ভর করেন। কিন্তু পাশের দেশে কি তেমন কোনো আত্মসমালোচনার প্রবণতা আছে? যেখানে প্রধান সংবাদ চ্যানেলগুলো দেশপ্রেমের নাটক মঞ্চস্থ করতে গিয়ে যেন বাস্তবতা ও সংযমের সব সীমা হারিয়ে ফেলেছে।
 

শহীদ

×