
ছবি : সংগৃহীত
বলিভিয়ার অ্যামাজনের জলাভূমিতে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয় একটি ছোট বিমান। অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যান পাইলটসহ তিন নারী ও এক শিশু—মোট পাঁচ আরোহী। তবে দুর্ঘটনার পর প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তারা বাইরের জগৎ থেকে। আর সেই সময়টুকু যেন ছিল এক আতঙ্ক আর লড়াইয়ের গল্প।
বিমানের আরোহীরা জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার পর তারা পড়েন চরম সংকটে। একদিকে শরীরজুড়ে ক্ষত, অন্যদিকে খাবার ও পানির সংকট। বিমানটির জ্বালানি মিশে গিয়েছিল আশপাশের জলাশয়ের পানিতে, ফলে পান করাও সম্ভব হয়নি সেই পানি। এক যাত্রী জানান, সঙ্গে থাকা কিছু আটা খেয়েই ক্ষুধা নিবারণ করেছেন তারা।
তবে শারীরিক কষ্টের চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়ায় জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি। চারদিক ঘিরে ছিল কুমির, সাপ ও নানা হিংস্র প্রাণীর আনাগোনা। একাধিকবার কুমির মাত্র ৩ মিটার দূরত্বে চলে এসেছিল, জানালেন বিমানের পাইলট। “একটুও বাড়িয়ে বলছি না,” বলেন তিনি, “প্রাণীগুলোর গর্জন ও চলাফেরা আমাদের শিহরিত করে তুলেছিল। দ্বিতীয় রাতের মশার কামড় ছিল অসহনীয়।”
রাতে ঘনবন আর জলাভূমির মাঝখানে পোকামাকড়, মশা এবং শিকারি প্রাণীদের মধ্যে বেঁচে থাকাটা হয়ে দাঁড়ায় কঠিনতম চ্যালেঞ্জ। এর মধ্যেই পাইলট জরুরি সংকেত পাঠানোর চেষ্টা করেন এবং বলেন, “আমরা দেখছিলাম আমাদের সহকর্মীরা ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে, কিন্তু উল্টে যাওয়া বিমানের ডানা দেখা যাচ্ছিল না, তাই তারা আমাদের দেখতে পায়নি।”
দীর্ঘ অপেক্ষার পর, দুর্ঘটনার প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পর, স্থানীয় কিছু জেলে দেখতে পান দুর্ঘটনায় পড়া যাত্রীদের। এরপর তাদের উদ্ধার করে সরবরাহ করা হয় খাবার ও প্রাথমিক চিকিৎসা।
এই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেন দ্বিতীয়বার নতুন জীবন ফিরে পেয়েছেন তারা। দুর্ঘটনা এবং এর পরবর্তী মুহূর্তগুলো এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে।
আঁখি