
রোকেয়া হলের সামনের সড়ক বিভাজকে ফুটেছে গোলাপী ঘাসফুল
ঘাসফুল একেবারে পায়ের কাছে ফুটে থাকে। তাই বলে নগন্য নয়। একটু লক্ষ্য করলে এর সৌন্দর্য ঠিক চোখে পড়ে। কবি তাই ফুলের হয়ে বলছেন, ‘আমরা ঘাসের ছোট ছোট ফুল/হাওয়াতে দোলাই মাথা/তুলো না মোদের দলো না পায়ে/ছিঁড় না নরম পাতা।’
অবশ্য এই ঘাস খুব চেনা সাধারণ ঘাস নয়। আমরা প্রতিনিয়ত যে ঘাস পায়ে মাড়িয়ে যাই তার থেকে একটু আলাদা। স্টেডিয়ামে বিছানো ঘাসের সঙ্গেও এর তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এটি লম্বাটে আর সরু দেখতে। ভূমিভাগ থেকে কয়েক ইঞ্চি ওপরের দিকে উঠে আসে। সবুজ ঘাসের কোলেই ফোটে রঙিন ফুল।
একই ফুল রেইন লিলি নামেও পরিচিত। মূলত বর্ষায় হয় বলেই এমন নামকরণ। একই ফুল রেইন ফ্লাওয়ার, ফেয়ারি লিলি, জেফাইর লিলি, ম্যাজিক লিলি, আটামাসকো লিলি নামে পরিচিত। বোটানিক্যাল নাম জেফাইরান্থেসিস রোজ। ইংরেজী নামগুলোর বাইরে বাংলাদেশে এটি ঘাসফুল নামে অধিক পরিচিত। ঘাসফুল বা রেইন লিলি আমারিলিডাসি পরিবারের সদস্য। আদিনিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। বাংলাদেশেও আছে বহু বছর ধরে। মজার ব্যাপার হলো ফুলটি সন্ধ্যায় নিজেকে কিছুটা গুটিয়ে নেয়। দিনের আলোয় স্বরূপে ফেরে। এ ফুলের রং হয় তিনটি। সাদা, হলুদ ও গোলাপি। সাদা ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম জেফাইরান্থেসিস ক্যানাডিডা। হলুদ ফুলটি জেফাইরান্থেসিস সিট্রিনা। আমাদের দেশে বেশি দেখা যায় গোলাপি ঘাসফুল বা রোজি রেইন লিলি।
এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গেলে রোজি রেইন লিলি দেখা যাবে। রোকেয়া হলের সামনে যে সড়ক বিভাজক তার ওপরে চমৎকার ফুটে আছে। সবাই দেখছেন এমন নয়। তবে ফুলপ্রেমীদের চোখ এড়াচ্ছে না। রাস্তা পারাপারের সময় ফুল দেখে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও তারা থামছেন। উপভোগ করছেন সৌন্দর্য। বাসা বাড়ির ছাদে বা বারান্দায় বিশেষ ব্যবস্থায় মাটি স্থাপন করে সেখানে ঘাসফুল লাগানো হয়। এর বাইরে কবরের ওপরিভাগে দেখা যায় ঘাসফুল।
শ্বেত পাথরে বাঁধানো কবরের মাঝখানে শূন্য মাটিতে লাগিয়ে দেয়া ঘাসফুল। ঘন সবুজ ঘাসে ঢাকা পড়ে বিবর্ণ মাটি। সবুজ সেই কার্পেটে ক্ষুদ্র কিন্তু দারুণ রঙিন ফুল ফুটে থাকে। বনানী কবরস্থানে কয়েকবার এ দৃশ্য দেখা হয়েছে। ঘাসফুলে ছেয়ে থাকা কবর বেদনাবোধ কমাতে সাহায্য করে। সব মিলিয়ে অন্যরকম একটি ফুল। ফুলটি খুঁজে নিন। এর সৌন্দর্য উপভোগ করুন।