নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল ॥ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়া ভূমিহীন পরিবারকে আত্মনির্ভরশীল করার উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। আশ্রয়ন প্রকল্পের যার যার পেশায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত করে টেকসই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হোসেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা য়ায়, এ পর্যন্ত উপজেলায় ১৪ টি ইউনিয়নের ১৭ টি এলাকায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর পেয়েছেন ২৭৬ টি পরিবার। আরো ৬০ টি ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলেই তা ঘর ও ভুমিহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।
আশ্রয়ন বাসিন্দাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে উপজেলার রসুপুর ইউনিয়নে শালিয়াবহ আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝে আশ্রয়ন প্রকল্প সংলগ্ন দেড় একর আয়তনের একটি খাস পুকুর প্রভাবশালীদের কাছ থেকে দখলমুক্ত করে আশ্রয়নের বাসিন্দাদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। গঠন করে দেয়া হয়েছে জেলে সমবায় সমিতি। এই আশ্রয়ন প্রকল্পে পরিবার রয়েছে ২১টি। তারা এখন পুকুরে মাছ চাষ করে নিজেদের অভাব দুর করার স্বপ্ন দেখছেন।
জেলে সমিতির সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, খাস পুকুরটি আমাদের লিজ দেয়ায় অনেক উপকার হয়েছে। পুকুরে মাছ চাষ এবং শ্রমিকের কাজ করে উপার্যিত অর্থে আমাদের অভাব ঘুচবে। তিনি এ উদ্যোগের জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারকে ধন্যবাদ জানান। বর্মণ সম্প্রদায়ের লোকজন বলেন, উপজেলার সাগরদিঘি ইউনিয়নে ফুলমালিরচালা আশ্রয়ণ প্রকল্পে মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়েছে ২৫ বর্মণ সম্প্রদায়ের ২৫ আদিবাসী পরিবার। এ সম্পদায়ের আদি পেশা ছিল তাঁত শিল্প। তাদের জীবন-যাপনে স্বচ্ছলতা আনতে সাগরদিঘী বাজার এলাকায় তাঁত শিল্প স্থাপনের জন্য ঘর করে দেয়া হয়েছে। তাঁত শিল্পের এই জায়গাটি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা বেদখলে করে রেখেছিল। এছাড়াও উপজেলার অন্যান আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের আলাদা আলাদাভাবে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অনেকেই আশ্রয়ন প্রকল্পের আশে পাশের পতিত জমিতে সবজি চাষ করছেন। অনেকেই মুদি দোকান করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘাটাইল উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, ইউএনওসহ উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নির্দেশনা মোতাবেক আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের নিজ নিজ পেশায় দক্ষ করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ভাসমান হিজরা সম্প্রদায়ের ৬ জনকে আশ্রয়নের ঘর প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাগ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার আশ্রয়নে ঠাই পাওয়া গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তাদের প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নের ব্যবস্থা করে টেকসই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।