ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের চ্যালেঞ্জ ॥ কাদের

প্রকাশিত: ২২:১৬, ২৩ অক্টোবর ২০২১

সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের চ্যালেঞ্জ ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ পরিবহন ও সড়কে শৃঙ্খলার বড় সঙ্কট রয়েছে উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এখন মূল সঙ্কট শৃঙ্খলার। এখানে যদি আমরা ব্যর্থ হই তবে আমাদের সব উন্নয়ন ব্যর্থ হয়ে যাবে। তাই সড়কে শৃঙ্খলা আনাই আমাদের চ্যালেঞ্জ। দেশে এত রাস্তা, ফ্লাইওভার, আন্ডারপাস, সীমান্ত সড়ক, মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ হচ্ছে। তারপরও আমরা কেন সড়কে শৃঙ্খলা আনতে পারব না। এতকিছু করার পরও আমি স্বস্তি পাচ্ছি না। শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় অবস্থিত সড়ক ভবন অডিটোরিয়ামে ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত ‘গতিসীমা মেনে চলি, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিদিন সড়কে মৃত্যুর খবর মনের ওপর কতটা চাপ ফেলে সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সবার দিন শুরু হয় একভাবে, আর আমার দিন শুরু হয় অন্যভাবে। কাগজের পাতায় অপ্রত্যাশিত মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবর পড়ে আমার দিন শুরু হয়। মন্ত্রী হলেও আমি তো মানুষ। আমারও কষ্ট হয়। আমিও দগ্ধ হই অদেখা দহনে। মনে হয় আমিও সেই অসহায় পরিবারের একজন। যে পরিবারের কয়েকজনও এক সঙ্গে পথের বলি হয়। কখনও দুই পরিবহনের সংঘর্ষে। কখনও তিন চাকার গাড়ি ইজিবাইক, নসিমন, করিমন।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, বিআরটিএর ড্রাইভিং লাইসেন্স দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। হাজার হাজার আবেদন, লাইসেন্স দেয়া শুরু হয়েছে। আমি বলব ছুটির দিনে কাজ করে হলেও আটকে থাকা লাইসেন্সগুলো দিয়ে দিতে হবে। এখন লাইসেন্সের অনেক ডিমান্ড। এজন্য আবেদনকারীরা হাহাকার করছে। এখন জট খুলেছে এটাই আশার বিষয়। আগামীতে আর কোন জট যাতে না হয় সেটি আমার চাওয়া। বিআরটিএর অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, এখানে যারা অপকর্ম ও দুর্নীতি করে তাদের নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যারা সেখানে যাওয়ার জন্য তদবির করে তারা তো কোন কিছুর বিনিময়ে তদবির করেন। কারণ সেখানে কিছু লেনদেন আছে। যারা এসব তদবির করে তাকে দায়ী না করে যার জন্য তদবির করে আমি তাকে দায়ী করব। এগুলো বন্ধ করতে হবে। আমি যতদিন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছি ততদিন কোন অনিয়ম ও দুর্নীতি মেনে নেব না। ওবায়দুল কাদের বলেন, কখনও দুই পরিবহনের সংঘর্ষে, কখনও তিন চাকার গাড়ি ইজি বাইক, নসিমন-করিমন দুর্ঘটনায় লোকজন প্রাণ হারায়। এর জন্য আমরা ২২ সড়কে এগুলো নিষিদ্ধ করেছি। কিন্তু অনেক জায়গায় এই নিষেধাজ্ঞা মানা হচ্ছে না। আর ইদানীং নতুন উপদ্রব হচ্ছে মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল কোন নিয়ম মানে না। প্রতিদিন সড়কে যে দুর্ঘটনা হয়, বেশির ভাগই মোটরসাইকেল। দুজন তিনজন চড়ে হেলমেট নাই। গত ৯ মাসে সড়কে ট্রাফিক আইন ভঙ্গের জন্য কী পরিমাণ জরিমানা আদায় হয়েছে, সেই পরিসংখ্যান অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি মল্লিক ফখরুল ইসলাম। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ দেখায় কত মামলা হয়েছে, কত জরিমানা করেছে। এগুলো আমার কাছে কোন বিষয় না। আমার কাছে বিষয় হচ্ছে সড়ক নিরাপদ আছে কিনা, সড়কে দুর্ঘটনা কমেছে কিনা। গাড়ির ফিটনেস আছে কি না। চালকের ফিটনেস আছে কিনা। তিনি বলেন, প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটছে, মানুষ মরছে। এই মর্মান্তিক দৃশ্যগুলো আমি সইতে পারি না। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মল্লিক ফখরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) আন্দোলনের চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ।
×