ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু

প্রকাশিত: ২০:২৯, ২১ অক্টোবর ২০২১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু

জবি সংবাদদাতা ॥ ‘এসো জ্ঞানের মশাল বয়ে নিয়ে যাই আগামীর পানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) দিবস উদ্যাপিত হয়েছে। সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এর পর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক। এরপর সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে বিশেষ অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের করোনার টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই টিকা প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ঢাকার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সহযোগিতায় এই টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে ১০৫ জন শিক্ষার্থীকে প্রথম ডোজ এবং ১০ জন শিক্ষার্থীকে দ্বিতীয় ডোজ কোভিড ১৯ টিকা দেওয়া হয়। আগামী ২৫ থেকে ২৯ অক্টোবর শুধুমাত্র প্রথম ডোজের টিকা দেয়া হবে। পরবর্তিতে দ্বিতীয় ডোজের টিকার সময়সূচি জানিয়ে দেয়া হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনষ্টিটিউটসমূহের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, রেজিস্ট্রার, হলের প্রভোস্ট, সিভিল সার্জন (ঢাকা জেলা), বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ ইমদাদুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে টিকা প্রদান কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দ্রুত টিকার আওতায় আনার ক্ষেত্রে এই অস্থায়ী ক্যাম্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকে শতভাগ টিকার আওতায় এনে সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জবি মেডিকেল সেন্টারে টিকা নেওয়ার পর উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান রাজু বলেন, এখানে কোন ধরনের জটিলতা ছিল না। টিকা কার্ড এর প্রিন্টের ব্যাবস্তা ছিল। দক্ষতার সাথে টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। টিকা যারা দিয়েছিলেন তারা এক্সপার্ট ছিলেন। উল্লেখ্য, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউটের সদস্যগণ এই টিকা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। ক্যাম্পে শুধুমাত্র সিনোফার্ম (ভেরোসেল) টিকা প্রদান করা হয়। টিকা গ্রহণের বিস্তারিত তথ্য ও শর্তাবলী বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী এবং কর্মরত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উক্ত (http://student.erp.jnu.ac.bd/jnuis/student/login/view.html লিংকে তথ্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। এরপর বেলা ১২টায় ভার্চ্যুয়াল প্লাটফরমে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভার শুরুতে প্রধান অতিথি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক কোভিড মহামারীতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বতস্ফূর্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করায় সকলকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান। এসময় তিনি বলেন, “এই দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টিকা কার্যক্রমের উদ্বোধন করতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই ক্যাম্পাসে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। এতে করে যেসকল শিক্ষার্থীরা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য তথ্য এখনও প্রদান করেন নি, তারা ক্যাম্পাসে বসেই জাতীয় পরিচয়পত্রের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবে।” তিনি আরো বলেন, “কেরাণীগঞ্জে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয়কৃত জমিতে খেলার মাঠ এবং কিছু আবাসন ব্যবস্থার আপতত সমাধান করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বৃদ্ধি তথা গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন গবেষণা সহায়তা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি করা হচ্ছে। এছাড়া খুব শীঘ্রই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ইনোভেশন হাবের জন্য চুক্তি করা হবে। সকল সুযোগ-সুবিধা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির একমাত্র লক্ষ্যই হচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তর করা।” বিশেষ অতিথি হিসেবে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা গবেষণায় অনেক এগিয়ে রয়েছে। আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক মানদন্ডে গবেষণার মাধ্যমেই এগিয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত স্থানের সংকুলান না থাকার পরও গবেষণায় শিক্ষকরা থেমে নেই। ভবিষ্যতে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনের মধ্য দিয়ে ক্লাসরুম, খেলার মাঠ ও আবাসন ব্যবস্থাসহ সকল ধরনের সমস্যা লাঘব হবে।” আলোচনা সভায় রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মোঃ ওহিদুজ্জামান এর সঞ্চালনায় বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ নূরে আলম আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. শামীমা বেগম ও প্রক্টর বক্তব্য প্রদান করেন। এছাড়াও আলোচনা সভায় কর্মকর্তা সমিতি, কর্মচারী সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য প্রদান করেন। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের অধীনে ৩৬টি বিভাগ ও দুইটি ইনস্টিটিউটে প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করছেন। উল্লেখ্য, ২০ অক্টোবর ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’। ২০ অক্টোবর ছুটি থাকায় আজ (২১ অক্টোবর-২০২১) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যাল দিবস ২০২১ তথা ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্যাপন করা হয়।
×