ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিজের সুরক্ষা নিজেকেই দিতে হবে ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:৩৪, ২৭ জুলাই ২০২১

নিজের সুরক্ষা নিজেকেই দিতে হবে ॥ তথ্যমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মানুষের মধ্যে করোনার শুরুতে যে ধরনের ভয় ছিল তা এখন আর নেই। সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। লকডাউন মানতে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি মনে করি মানুষের মধ্যে করোনার শুরুতে যে ধরনের ভীতি ছিল সে ভীতিটা এখন আর নেই। গত এক বছর গ্রামে করোনা না ছড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে গ্রামের মানুষের মধ্যে একটি ধারণা জন্মেছিল গ্রামে কখনও করোনা আসবে না। কিন্তু এখন শহরের হাসপাতালে যে রোগীগুলো ভর্তি হচ্ছে তার ৭০ ভাগ রোগী গ্রাম থেকে আসছে। এখন সারাদেশে করোনা ছড়িয়েছে। এজন্য সবাইকে অনুরোধ জানাব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে। নিজের স্বার্থেই লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমার নিজের সুরক্ষা আমাকেই দিতে হবে। আমার সুরক্ষা অন্য কেউ দিতে পারবে না। এজন্য বিনীতভাবে অনুরোধ জানাব, আমরা সবাই যেন সরকারের নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘জনমত উপেক্ষা করে একটা একগুয়েমি সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার দিন দিন হিংস্র হয়ে যাচ্ছে। ফলে জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে’ এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে অতীতে বাংলাদেশে বিএনপি হিংস্রতা দেখিয়েছে। বিশেষ করে ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে যেভাবে মানুষকে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়েছে। বহু মানুষকে ঝলসে দেয়া হয়েছে, অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছে। এই হিংস্রতার রাজনীতি বাংলাদেশ এর আগে কখনও দেখেনি। পৃথিবীতে সমসাময়িককালে রাজনীতির কারণে মানুষকে এভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় এটি কেউ দেখেনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা নিজেরা হিংস্রতার রাজনীতি করেন। এজন্য এ কথাগুলো বলেন। ‘সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের অভিপ্রায় নিয়ে দেশ শাসন করছে। এজন্য বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে’, বিএনপির এমন মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, এখন যদি লকডাউনের মধ্যে কেউ ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার হয়, তাহলে তিনি যদি কোন দল করেন এবং তিনি যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন তাকে কি গ্রেফতার করা যাবে না? আমার প্রশ্ন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবরা ফৌজদারি আসামির পক্ষ কেন নেন? তিনি বলেন, যেকোন রাজনীতিবিদ যদি ফৌজদারি মামলার আসামি হন আইন এবং আদালত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আইন এবং ন্যায়প্রতিষ্ঠার জন্য যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের ফৌজদারি অপরাধে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুতরাং এখানে রাজনীতির কোন সংশ্লেষ নেই। লকডাউন নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কথা বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘লকডাউন দেয়ার আগে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল দেশে কঠোর লকডাউন দেয়া দরকার। আবার লকডাউন দেয়ার পর বলছে, এ লকডাউন অপরিকল্পিত। তাহলে তাদের মতে পরিকল্পিতটা কি সেই প্রেসক্রিপশনটা একটু দিক না।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশে আজ প্রায় দেড় বছর করোনা। এ সময়ে দেশের খেটে খাওয়া একজন মানুষও অনাহারে মৃত্যুবরণ করেনি এবং দেশে কোন হাহাকার নেই। অনেকের সাময়িক অসুবিধা হয়েছে। সরকারের ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতার কারণে মানুষের মধ্যে কোন হাহাকার নেই। আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিলেন জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমাদের দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এই অসুবিধা সাময়িক। সবাই যদি স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে মেনে চলে তাহলে লকডাউন প্রলম্বিত করতে হবে না।’ হাছান মাহমুদ আরও বলেন, বিএনপি এসব বিষয় নিয়ে কথা বলে অথচ ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে ১৫৮ দিন হরতাল অবরোধ ডেকেছিল তারা। তখন জনগণের অসুবিধা হয়েছিল, সেটা মাথায় ছিল না? ১৫৮ দিন তারা মানুষজনকে বন্দী করে রেখেছিল। আজকে তো মানুষের জীবন রক্ষা করার জন্য লকডাউন দিতে হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর সব দেশে এ পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে। কিন্তু বিএনপি যে ১৩, ১৪ ও ১৫ সালে ১৫৮ দিন মানুষকে বন্দী করে রেখেছিল সেটার জবাবটা কি?
×